শেয়ার বিজ ডেস্ক: এশিয়ার চলতি বছর সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড় ইয়াগির আঘাতে ভিয়েতনামে প্রায় ৮১ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডং (৩৩১ কোটি ডলার) ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গত শনিবার দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে। টাইফুন ইয়াগির আঘাতে ভিয়েতনামে ক্ষয়ক্ষতির এই পরিমাণ আগের অনুমানের প্রায় দ্বিগুণ। খবর: রয়টার্স।
প্রবল শক্তিশালী এ ঝড়ে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটিতে অন্তত ২৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৩৪ জন এখনও নিখোঁজ। ঝড়টি ভিয়েতনামের রপ্তানি-নির্ভর শিল্পকেন্দ্রগুলোতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। ইয়াগির আঘাতে বিভিন্ন কারখানা, অবকাঠামো, কৃষিজমি এবং বসতবাড়ি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, পাশাপাশি একটি সেতুও ভেঙে পড়েছে। ভিয়েতনামের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় উপকূলে আঘাত হানে সুপার টাইফুন ইয়াগি। এই ঘূর্ণিঝড়কে চলতি বছর এশিয়ায় আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় বলা হচ্ছে।
কৃষিমন্ত্রী লে মিন হোয়ানকে উদ্ধৃত করে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ভিয়েতনাম নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, প্রাথমিক হিসাবে, ইয়াগির আঘাতে দেশটির অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৮১ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডং। এর বেশির ভাগ ক্ষয়ক্ষতিই হয়েছে ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যার কারণে। কৃষিমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোকে উৎপাদন ফের শুরু করার জন্য জনগণকে সহায়তা করতে এবং সরবরাহ ও মূল্য নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানিয়েছেন।
ক্ষয়ক্ষতির এই হিসাব ভিয়েতনামের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আগের ১৬০ কোটি ডলারের অনুমানকে ছাড়িয়ে গেছে। এই ঝড়ের কারণে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ থেকে কমে ৬ দশমিক ৮ শতাংশতে নেমে আসতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। টাইফুন ইয়াগির কারণে ভিয়েতনামে বেশ কিছু শূকরের খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে সেখানে জ্যান্ত শূকরের দাম ক্রমাগত বাড়ছে। গত বৃহস্পতিবার রেটিং এজেন্সি এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল জানিয়েছে, ভিয়েতনামের ব্যাংকগুলোর লাভজনকতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ঋণ ছাড় দিচ্ছে।
বর্তমানে ভিয়েতনামের কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পুনর্গঠনের দিকে মনোনিবেশ করেছে এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। টাইফুন ইয়াগির প্রভাবে মিয়ানমারেও ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেখানে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ২ লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষ নিজেদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বন্যার কারণে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে বিদেশি সহায়তার অনুরোধ জানিয়েছে দেশটির ক্ষমতাসীন জান্তা সরকার। বন্যায় যেসব এলাকা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে রাজধানী নেপিদো।