নিজস্ব প্রতিবেদক: বারাকা পাওয়ার লিমিটেডকে প্রেফারেন্স শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে টাকা তোলে অনুমোদিত মূলধন বৃদ্ধির প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। গত বৃহস্পতিবার প্রদত্ত চিঠির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বিএসইসি। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
এর আগে গত ৩১ অক্টোবর ২০১৭ সালে বারাকা পাওয়ার প্রেফারেন্স শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে অনুমোদিত মূলধন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু বিএসইসির উল্লেখিত শর্ত পূরণ করতে না পারায় কোম্পানিটির মূলধন বাড়ানোর প্রস্তাব নাকচ হয়ে যায়।
শর্ত অনুযায়ী তালিকাভুক্ত কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে পেইড-আপ ক্যাপিটালের কমপক্ষে ৩০ শতাংশ শেয়ার টানা তিন বছর ধারণ করতে হয়। বারাকা পাওয়ার এ শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় কোম্পানিটির প্রস্তাবটি অনুমিত দেয়নি বিএসইসি।
এর আগে ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর কোম্পানিটির পর্ষদ সভায় ১০ টাকা দরে আট কোটি প্রেফারেন্স শেয়ার ছেড়ে বাজার থেকে ৮০ কোটি টাকা তোলার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। শেয়ারগুলোর মেয়াদ নির্ধারণ হয়েছিল পাঁচ থেকে সাত বছরে এবং প্রতি বছর আট থেকে নয় শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়া হবে বলেও সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
‘এ’ ক্যাটেগরির কোম্পানিটি ২০১১ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। গতকাল কোম্পানির শেয়ারদর দশমিক ৩৬ শতাংশ বা ১০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি সর্বশেষ ২৭ টাকা ৮০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দর ছিল ২৭ টাকা ৭০ পয়সা। দিনভর শেয়ারদর সর্বনি¤œ ২৭ টাকা ৫০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ২৭ টাকা ৯০ পয়সায় হাতবদল হয়। ওইদিন এক লাখ ১৪ হাজার ৮২৪টি শেয়ার ১৪৪ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ৩১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। গত এক বছরে শেয়ারদর ২৭ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৪৮ টাকায় হাতবদল হয়।
চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৭৬ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময় ছিল ৮৯ পয়সা। অর্থাৎ ইপিএস কমেছে ১৩ পয়সা। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) হয়েছে ২০ টাকা ৮৭ পয়সা, একই বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ছিল ২০ টাকা ১২ পয়সা। ওই সময় কর-পরবর্তী মুনাফা করেছে ১৩ কোটি ১৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। দ্বিতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে (অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০১৭) কোম্পানির ইপিএস হয়েছে ৫০ পয়সা, যা ২০১৬ সালের একই সময় ছিল ৬৪ পয়সা। অর্থাৎ দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানির ইপিএস কমেছে ১৪ পয়সা। আর দুই প্রান্তিকে বা ছয় মাস শেষে ইপিএস দাঁড়ায় এক টাকা ১৬ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল এক টাকা ৪২ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত এনএভি হয় ১৮ টাকা ২১ পয়সা। যা ৩০ জুন ২০১৭ পর্যন্ত ছিল ২০ টাকা ১২ পয়সা। ওই সময় কর-পরবর্তী মুনাফা করেছে ৯ কোটি ৯২ লাখ ১০ হাজার টাকা।
৩০০ কোটি টাকা অনুমোদিত ও ২০০ কোটি পাঁচ লাখ ৬০ হাজার টাকা পরিশোধিত মূলধনের এ কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ২০ কোটি ৫৫ হাজার ৭৮৮টি। কোম্পানির রিজার্ভে আছে ৫২ কোটি ৯৪ লাখ টাকা।
সর্বশেষ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে কোম্পানির মূল্য আয় অনুপাত ১০ দশমিক ৫৩। সর্বশেষে নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে মূল্য আয় অনুপাত ১৩ দশমিক ৭৬। কোম্পানিটি ২০১৭ সালে ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরে পাঁচ শতাংশ নগদ ও ১৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে, যা আগের বছর ছিল ১৫ শতাংশ নগদ ও পাঁচ শতাংশ বোনাস। ওই সময় ইপিএস ছিল দুই টাকা ৬৩ পয়সা এবং এনএভি ২০ টাকা ১২ পয়সা। এটি আগের বছর ছিল যথাক্রমে দুই টাকা ৬৫ পয়সা ও ১৯ টাকা ৮৬ পয়সা। ওই সময় কর-পরবর্তী মুনাফা করেছে ৪৫ কোটি ৭৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা, যা আগের বছর ছিল ৪৩ কোটি ৯০ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
কোম্পানির মোট শেয়ারের ১৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালকদের, ২৪ দশমিক ৯৩ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক ও ৫৬ দশমিক ১৪ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীর হাতে।
টাকা তোলার অনুমতি পায়নি বারাকা পাওয়ার
