প্রতিনিধি, টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলে অরক্ষিত লেভেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় একই পরিবারের তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় শোকে স্তব্ধ পরিবারের অন্য সদস্যরা। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সদর উপজেলার হাতিলা লেভেলক্রসিংয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেনÑআজগর আলী (৩২), তার স্ত্রী সারামণি (২৫) ও তাদের আড়াই বছর বয়সী ছেলে আব্দুর রহমান আইয়ান। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তাদের পাঁচ বছর বয়সী আব্দুল্লাহ নামের আরও এক ছেলে। তারা বাসাইল উপজেলার ময়থা উত্তরপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তারা সদর উপজেলার করটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় থাকতেন।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আজগর আলী তার স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে হাতিলা এলাকায় আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পথে তারা হাতিলা রেলক্রসিং পাড় হচ্ছিল। এ সময় একটি ট্রেন এসে তাদের ধাক্কা দেয়। এ ঘটনায় সারামণি ও তার ছোট ছেলে আব্দুর রহমান আইয়ান ঘটনাস্থলেই মারা যায়। আর আহত হন আজগর আলী ও তার বড় ছেলে আব্দুল্লাহ। আহত অবস্থায় আজগর আলী ও আব্দুল্লাহকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আজগর আলীকে ঢাকায় নেয়া হয়। ঢাকায় নেয়ার পথে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাতে আজগর আলীরও মৃত্যু হয়। আর তাদের বড় ছেলে আহত অবস্থায় টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এদিকে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাদের বড় ছেলে আব্দুল্লাহসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়েছেন তারা। হাতিলা রেলক্রসিং ছাড়াও জেলার বিভিন্ন স্থানের রেলক্রসিংয়ে নেই গেটম্যান। ফলে বিভিন্ন সময় ট্রেনে কাটা পড়ে অনেকে মারা যাচ্ছেন।
নিহতদের স্বজন আশরাফ আলী বলেন, ‘আজগর আলী তার স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে নানার বাড়িতে বেড়াতে যায়। সেখান থেকে ফেরার সময় অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ে একটি ট্রেন এসে তাদের ধাক্কা দেয়। এ সময় ঘটনাস্থলেই আজগর আলীর স্ত্রী ও ছোট ছেলে মারা যায়। এরপর ঢাকায় নেয়ার পথে আজগর আলীও মারা যান।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ের কারণে আজ তাদের মৃত্যু হলো। রেলক্রসিংয়ে আজ যদি কোনো গেটম্যান থাকতো তাহলে এমন ঘটনা ঘটতো না। ওই রেলক্রসিংয়ে মাঝে মধ্যেই লোকজন মারা যাচ্ছে। তারপরও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’ টাঙ্গাইলের ঘারিন্দা স্টেশন মাস্টার সোহেল খান বলেন, ‘কুড়িগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। শুনেছি ওই ট্রেনে কাটা পড়ে তিনজন মারা গেছে। লাশ তাদের স্বজনরা নিয়ে গেছেন।’