প্রতিনিধি, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলে স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে তিনজনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। একই মামলার আরেক আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক খালেদা ইয়াসমিন এ রায় ঘোষণা করেন। টাঙ্গাইলের আদালত পরিদর্শক তানভীর আহমেদ এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডিতরা হলেন জেলার গোপালপুর উপজেলার ভেঙ্গুলা গ্রামের মৃত নগেন চন্দ্র দাসের ছেলে শ্রী কৃষ্ণ দাস, ধনবাড়ী উপজেলার ইসপিঞ্জাপুর গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে সৌরভ আহমেদ হƒদয় ও একই গ্রামের মৃত মজিবর রহমানের ছেলে মিজানুর রহমান। এছাড়া একই গ্রামের মেহেদী হাসান টিটুকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়।
আদালত পরিদর্শক তানভীর আহমেদ জানান, গোপালপুর উপজেলার জয়নগর গ্রামের খোকন মিয়ার স্কুলপড়–য়া ছাত্রী খোদেজা খাতুন ২০২১ সালের ২ আগস্ট বাড়ি থেকে নানির বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। পরে তাকে কোথাও না পেয়ে ৪ আগস্ট গোপালপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে যান খোকন মিয়া। পরে থানা থেকে তাকে জানানো হয় মেয়ের একটি ছবি নিয়ে আসতে হবে। এ কথা শুনে ছবি আনতে বাড়িতে চলে যান খোদেজার স্বজনরা। ওইদিনই ভ‚ঞাপুর-তারাকান্দি সড়কের ভ‚ঞাপুর যমুনা নদীর পারে বস্তাবন্দি একটি মেয়ের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
তিনি আরও জানান, ময়নাতদন্তের পর নিহত মেয়েটির কোনো পরিচয় না পাওয়ায় ওইদিনই বেওয়ারিশ হিসেবে লাশটি উপজেলার ছাব্বিশা কবরস্থানে দাফন করা হয়। পরে পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে ছবি দেখে উদ্ধার হওয়া লাশটি খোদেজার বলে শনাক্ত করে তার পরিবারের লোকজন। পরে নিহত খোদেজার বাবা খোকন মিয়া বাদী হয়ে ৬ আগস্ট ভ‚ঞাপুর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) হস্তান্তর করা হয়। পরে তথ্যের ভিত্তিতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যার সঙ্গে জড়িত শ্রী কৃষ্ণ দাস, সৌরভ আহমেদ হƒদয়, মিজানুর রহমান ও মেহেদী হাসান টিটুর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়। আদালত সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে তিনজনের ফাঁসি ও একজনকে খালাস প্রদান করা হয়। রায় ঘোষণার পর ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত শ্রী কৃষ্ণ দাস, সৌরভ আহমেদ হƒদয় ও মিজানুর রহমানকে জেলা কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়।
