Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 1:02 am

টাঙ্গাইলে প্রাথমিকের আট শতাধিক শিক্ষকের পদ শূন্য

আবদুল্লাহ আল নোমান, টাঙ্গাইল: তীব্র শিক্ষক সংকটে টাঙ্গাইলের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। জেলার ৫৭৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোনো প্রধান শিক্ষকই নেই। আর সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে ২৬৪টি। ফলে শিক্ষক সংকটের মধ্যেই কোনোমতে চলছে জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা কার্যক্রম।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলার ১২টি উপজেলায় মোট এক হাজার ৬০৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২৮৪টি ও সদ্য জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২৯০টি প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য আছে। এছাড়া সহকারী শিক্ষক পদে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৬৬টি ও সদ্য জাতীয়করণকৃত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৯৪টি পদ শূন্য রয়েছে।

এর মধ্যে প্রধান শিক্ষক পদে ঘাটাইল উপজেলায় ৬৫, সখীপুর উপজেলায় ৪৫, গোপালপুর উপজেলায় ৫১, বাসাইল উপজেলায় ৪৩, টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় ৩৪, দেলদুয়ার উপজেলায় ৪৪, মির্জাপুর উপজেলায় ৬৯, কালিহাতী উপজেলায় ৬৯, মধুপুর উপজেলায় ৩৫, নাগরপুর উপজেলায় ৫৪, ভূঞাপুর উপজেলায় ৩৬ ও ধনবাড়ী উপজেলায় ২৯টি পদ শূন্য রয়েছে।

সহকারী শিক্ষক পদে ঘাটাইল উপজেলায় চার, সখীপুর উপজেলায় ৬৬, গোপালপুর উপজেলায় ৫০, বাসাইল উপজেলায় ২৮, টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় আট, দেলদুয়ার উপজেলায় চার, মির্জাপুর উপজেলায়

১৬, কালিহাতী উপজেলায় ১০, মধুপুর উপজেলায় ১০, নাগরপুর উপজেলায় ৩৫, ভূঞাপুর উপজেলায় ২৭ ও ধনবাড়ী উপজেলায় ছয়টি পদ শূন্য রয়েছে।

জেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা

জানিয়েছেন, শিক্ষক সংকটের ফলে পাঠদানসহ প্রতিষ্ঠানিক কার্যক্রমে প্রতিনিয়তই বিভিন্ন ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এ কারণে বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে। তারা দ্রুত এ সমস্যার সমাধান চেয়েছেন।

গোপালপুর উপজেলার শাখারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আঞ্জু আনোয়ার ময়না বলেন, এ বিদ্যালয়ে ২০১৩ সাল থেকে প্রধান শিক্ষকের পদ খালি রয়েছে। এছাড়া একাধিক সহকারী শিক্ষককের পদও খালি। ৯ জন শিক্ষকের পদ থাকলেও চারজন শিক্ষক কর্মরত থাকায় বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তিনি দ্রুত এ সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোজাহারুল ইসলাম মাজাহার বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নের জন্য এটি অন্যতম অন্তরায়। জেলায় ৮৩৮ শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতি না হওয়ায় এ সংকটের সৃষ্টি হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল আজিজ বলেন, যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে অতি দ্রুতই সেসব পদ পূরণ করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। দ্রুতই জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকের শূন্যপদগুলো পূরণ হয়ে যাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।