টাঙ্গুয়ার হাওরের জন্য বিখ্যাত সুনামগঞ্জ। নৈসর্গিক এ হাওর দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। এখানকার স্বচ্ছ জলরাশি মনে আনন্দের সৃষ্টি করে।
সুনামগঞ্জে বেড়াতে আসা প্রায় সবাই এ হাওরে আসেন। বিস্তীর্ণ জলরাশির খেলায় মেতে ওঠেন পর্যটকরা। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জলাভূমি এটি। ১০০ বর্গকিলোমিটারজুড়ে বিস্তৃত এ জলাভূমিতে রয়েছে প্রায় ১৪০ প্রজাতির মাছ, ১২ প্রজাতির ব্যাঙ ও ১৫০ প্রজাতির সরীসৃপ।
সিলেট থেকে বাসযোগে সুনামগঞ্জ যাই আমরা কয়েক বন্ধু মিলে। এখান থেকে গাড়িতে চড়ে হাওরের উদ্দেশে রওনা দিই। পথেই আরও অনেক পর্যটকের সঙ্গে দেখা হয়, পরিচিত হই তাদের সঙ্গে। এখানকার প্রধান সমস্যা আবাসন থাকার কোনো ব্যবস্থা নেই। তবে নৌকায় রাতযাপনের সুযোগ রয়েছে। অনেক পর্যটক এ নৈসর্গিক পরিবেশ উপভোগের জন্য রাতটুকু নৌকায় কাটিয়ে দেন। চাঁদের আলোয় জলরাশিকে অপার্থিব মনে হয় তখন। এ
মোহনীয় পরিবেশে আমরাও যেন হারিয়ে যাই দূর কোন অজানায়। এ অনুভূতি কেবল হƒদয়ে ধারণ করা যায়, ভাষায় প্রকাশ করা দুরূহ।
নৌকা ভাড়া নিতে চাইলে দরদাম করে নেওয়া উত্তম। স্বচ্ছ জলরাশির পাশাপাশি হাওরের আশপাশের পরিবেশও নান্দনিকতায় ভরপুর। পাহাড়ে ঘেরা এ জনপদের মানুষের সঙ্গে নদীর গভীর মিতালি রয়েছে। নদীকে কেন্দ্র করেই তাদের আয়-রোজগার। তবে তাদের জীবনযাত্রা সহজ নয়। এখানে তাদের জীবনযুদ্ধ চলে প্রতিনিয়ত। সে রাতে আমাদের নৌকা ধীরে ধীরে এগিয়ে চলছিল। নীলাকাশ, পাহাড় আর স্বচ্ছ জলরাশি আবেগতাড়িত করে তোলে আমাদের সবাইকে।
শীতকালে এখানে অনেক অতিথি পাখির আগমন ঘটে। বহু প্রজাতির পাখি দূর-দূরান্ত থেকে আসে। এখানকার পরিবেশ এতটাই মনোরম যে, দিনের পর দিন কাটিয়ে দিতে চায় মন। বর্ষাকালে এখানকার পানি টইটম্বুর থাকে।
সময় করে একদিন আপনিও ঘুরে আসতে পারেন টাঙ্গুয়ার হাওর থেকে। পরিষ্কার পানি ও নির্মল বাতাস দেহমনকে সজীব করে তুলবে নিশ্চিত।
তারেকুর রহমান