নিজস্ব প্রতিবেদক: সপ্তাহের তৃতীয় দিনেও উভয় বাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে। কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই এ পতনকে অনেকেই ‘অস্বাভাবিক পতন’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। এর ফলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক চার হাজার ৫০৬ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সিংহভাগ কোম্পানির দরপতন হয়। এতে করে ডিএসইর প্রধান সূচকের ২৬ পয়েন্ট পতন হয়। বাকি দুই সূচকেরও পতন হয়। লেনদেনের শুরুতেই সূচক ঊর্ধ্বমুখী হলেও ৩০ মিনিটের মাথায় নেমে যায়। এরপর টানা পতনে থেকে লেনদেন শেষ হয়। সূচকের পতন হলেও আগের দিনের তুলনায় লেনদেন কিছুটা বেড়ে ৩০৫ কোটি টাকা হয়। চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক ও বেশিরভাগ শেয়ারের দর কমলেও লেনদেন সামান্য বেড়েছে।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৬ দশমিক ৮১ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৫৯ শতাংশ কমে চার হাজার ৫০৬ পয়েন্টে অবস্থান করে।
ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক ৯ দশমিক ৯৭ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৯৭ শতাংশ কমে এক হাজার ১২ দশমিক ২৯ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ১৩ দশমিক ১৩ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৮৪ শতাংশ কমে এক হাজার ৫৪৮ দশমিক ৩৭ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন এক হাজার ৭৬৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা কমে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৪২ হাজার ৮৮২ কোটি ২৭ লাখ টাকায়। ডিএসইতে লেনদেন হয় ৩০৫ কোটি ৮৭ লাখ ১৭ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২৭৫ কোটি ২৯ লাখ ৪৫ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৩০ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। এদিন ১০ কোটি ৯৯ লাখ ৯২ হাজার ৮৭৫টি শেয়ার এক লাখ দুই হাজার ২১৬ বার হাতবদল হয়। লেনদেন হওয়া ৩৫৩ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৯৬টির, কমেছে ২০৩টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৫৪টির দর।
গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে স্কয়ার ফার্মা। কোম্পানিটির ১২ কোটি ৫২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর কমেছে এক টাকা ১০ পয়সা। এরপর সায়হাম কটনের আট কোটি ৭৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর কমেছে এক টাকা ১০ পয়সা। সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্সের আট কোটি ৪৭ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর কমেছে তিন টাকা ৪০ পয়সা। সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজের পাঁচ কোটি ৯২ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দরপতন হয় এক টাকা ১০ পয়সা। ড্যাফোডিল কম্পিউটারসের পাঁচ কোটি ৩৫ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে দুই টাকা ৯০ পয়সা। এছাড়া ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের চার কোটি ৮৯ লাখ টাকার, নিউ লাইন ক্লথিংসের চার কোটি ৫৯ লাখ, খুলনা পাওয়ারের চার কোটি ৫৪ লাখ, লাফার্জহোলসিমের চার কোটি ৪৫ লাখ ও ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর সাড়ে চার কোটি ৪২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
সাত দশমিক ৮০ শতাংশ বেড়ে দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসে গ্রীনডেল্টা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। দর বেড়েছে ছয় দশমিক ৬১ শতাংশ। মতিন স্পিনিংয়ের দর পাঁচ দশমিক ৬১ শতাংশ, এমএল ডায়িংয়ের দর পাঁচ দশমিক ৪২ শতাংশ, ড্যাফোডিল কম্পিউটারসের দর পাঁচ দশমিক এক শতাংশ, রেকিট বেনকিজারের দর চার দশমিক ৯৯ শতাংশ, এসইএমএল এফবিএসএল গ্রোথ ফান্ডের দর চার দশমিক ৯১ শতাংশ, শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজের দর চার দশমিক ৪২ শতাংশ, ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিংয়ের দর চার দশমিক ২৮ শতাংশ এবং বে লিজিংয়ের দর তিন দশমিক ৬৭ শতাংশ বেড়েছে।
এছাড়া আট দশমিক ৭২ শতাংশ দর কমে পতনের শীর্ষে উঠে আসে সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্স। সায়হাম টেক্সটাইলের দর ছয় দশমিক ৮৩ শতাংশ, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের দর ছয় দশমিক ৬৬ শতাংশ, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের দর পাঁচ দশমিক ৬৬ শতাংশ, এসএস স্টিলের দর পাঁচ দশমিক ৩৪ শতাংশ, এএফসি এগ্রো বায়োটেকের দর পাঁচ দশমিক ১০ শতাংশ, এমআই সিমেন্টের দর চার দশমিক ৯৬ শতাংশ, মোজাফফর হোসেন স্পিনিং মিলের দর চার দশমিক ৯০ শতাংশ, সি অ্যান্ড এ টেক্সটাইলের দর চার দশমিক ৭৬ শতাংশ ও বিডি ওয়েল্ডিংয়ের দর চার দশমিক ৬০ শতাংশ কমেছে।
অন্যদিকে সিএসইতে গতকাল সিএসসিএক্স মূল্যসূচক ৮৯ দশমিক ৯৫ পয়েন্ট বা এক দশমিক শূন্য সাত শতাংশ কমে আট হাজার ৩০১ দশমিক ৪৫ পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৪৫ দশমিক ৬১ পয়েন্ট বা এক দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ কমে ১৩ হাজার ৬৮৩ দশমিক শূন্য তিন পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল সর্বমোট ২৩৯ কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৬০টির, কমেছে ১৪৩টির ও অপরিবর্তিত ছিল ৩৬টির দর।
সিএসইতে এদিন ২৪ কোটি ৯৯ লাখ ৯৪৭ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১৪ কোটি ৬৭ লাখ ৭২ হাজার ৪০৫ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ১০ কোটি ৩১ লাখ ২৮ হাজার টাকা।
সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করে জিপিএইচ ইস্পাত। কোম্পানিটির ১৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এর পরের অবস্থানগুলোয় থাকা বসুন্ধরা পেপার মিলসের ৬৮ লাখ টাকার, এসকে ট্রিমসের ৪৯ লাখ, বেক্সিমকোর ৩২ লাখ, ফরচুন সুজের ৩০ লাখ, কাট্টলী টেক্সটাইলের ৩০ লাখ, স্কয়ার ফার্মার ২৮ লাখ, প্রিমিয়ার ব্যাংকের ২৭ লাখ, লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের ২৪ লাখ ও সমতা লেদারের ২৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।