টানা পতনে সূচক কমেছে ৪৪৫ পয়েন্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের পুঁজিবাজারে দরপতন অব্যাহত রয়েছে। গত কয়েক কার্যদিবসের মতো সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস গতকাল রোববার প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের পতন হয়েছে। এর মাধ্যমে টানা ৯ কার্যদিবসে সূচকের পতন হয়েছে। এতে সূচক কমেছে ৪৪৫ পয়েন্ট।  আর শেষ ১৩ কার্যদিবসের মধ্যে ১২ কার্যদিবসেই সূচকের পতন হয়েছে পুঁজিবাজারে। টানা দরপতনে বিনিয়োগকারীদের লোকসানের পাল্লা ভারী হচ্ছে।

মূল্যসূচকের অব্যাহত দরপতনের পাশাপাশি পুঁজিবাজারে লেনদেন খরাও দেখা দিয়েছে। ডিএসইতে লেনদেন কমে ৩০০ কোটি টাকার ঘরে চলে এসেছে। এতে সাড়ে চার মাসের মধ্যে ডিএসইতে সর্বনিম্ন লেনদেন হয়েছে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গতকাল পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই ঋণাত্মক হয়ে পড়ে সূচক। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দরপতনের মাত্রাও বাড়তে থাকে। এতে লেনদেনের একপর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ৮৩ পয়েন্ট কমে যায়। তবে লেনদেনের শেষদিকে কিছু প্রতিষ্ঠানের দরপতনের মাত্রা কিছুটা কমে। ফলে দরপতনের তালিকা থেকে বেরিয়ে আসে কিছু প্রতিষ্ঠান। এতে সূচকের পতনের মাত্রা কিছুটা কমে।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে মাত্র ৩১ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৩২২ প্রতিষ্ঠানের। এছাড়া ২৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ফলে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৬১ পয়েন্ট কমে পাঁচ হাজার ২৫০ পয়েন্টে নেমে গেছে। এর মাধ্যমে ২০২১ সালের ১২ এপ্রিলের পর সূচকটি সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে গেল। ২০২১ সালের ১২ এপ্রিল ডিএসইর প্রধান সূচক ছিল পাঁচ হাজার ১৮৮ পয়েন্ট। এরপর সূচক আর এত নিচে নামেনি।

অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৩ পয়েন্ট কমে এক হাজার ১৪৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৮ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৮৮৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩২২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫০৮ কোটি টাকা। সে হিসাবে ১৮৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা লেনদেন কমেছে। লেনদেন শুধু আগের দিনের তুলনায় কমেনি, চলতি বছরের ৩ জানুয়ারির পর হয়েছে সর্বনিম্ন লেনদেন।

টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ওরিয়ন ফার্মার শেয়ার। কোম্পানিটির ২০ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকোর শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৫ কোটি ২২ লাখ টাকার। ১২ কোটি ৭৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লাভেলো আইসক্রিম।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছেÑইউনিলিভার কনজ্যুমার কেয়ার, রিলায়েন্স ওয়ান দ্য ফার্স্ট স্কিম অব রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স মিউচুয়াল ফান্ড, ওরিয়ন ইনফিউশন, বেস্ট হোল্ডিংস, সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ ও স্কয়ার ফার্মা।

অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৭০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬৫টির এবং ২১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে আট কোটি ৩০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৬৯ কোটি এক লাখ টাকা।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০