Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 12:45 pm

টানা বর্ষণে মেহেরপুরে ফসলের ব‍্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

প্রতিনিধি, মেহেরপুর : টানা চারদিনের বৃষ্টিতে নাকাল হয়ে পড়েছে মেহেরপুরের জনজীবন। বৃষ্টিতে একদিকে যেমন ফসলের ক্ষতি হয়েছে তেমনি ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া ছিন্নমূল মানুষগুলো। বৃষ্টিতে সময়মতো কাজে যেতে পারছেন না তারা। খুব প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না কেউ।

সোমবার সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকায় থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। তবে দুপুরের পর থেকে আবহওয়া কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১০৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এসময় বাতাসের গড় গতিবেগ ছিল ঘন্টায় ৩০-৩৫ কিলোমিটার। তবে আজ আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহওয়া অফিস।

এদিকে টানা বৃষ্টি ও দমকা বাতাসে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে ফসলের মাঠ। পানিতে তলিয়ে গেছে ধানের ক্ষেত। কলা,পেঁপে, মরিচ, শীমসহ উঠতি ফল-ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

সদর উপজেলার কলা চাষি মফিজুর রহমান মিঠু বলেন, বৃষ্টির কারণে কলা ও মরিচের বেশি ক্ষতি হয়েছে। আমার চার বিঘা জমির কলা গাছের প্রায় অধিকাংশ গাছই পড়ে গেছে। অনেক গাছে নতুন কাঁদি আবার অনেকগুলো বিক্রির উপযোগী হয়েছিল। এই দুর্যোগে গাছ পড়ে যাওয়ায় কম দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। সবমিলিয়ে এই ক্ষতিতে আমার খরচ উঠবে না।

সদর উপজেলার ময়ামারি গ্রামের চাষি লালন বলেন, পানি আর দমকা বাতাসে মাঠে আমার দুই বিঘা জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে । এছাড়াও এই মাঠে চাষীদের প্রায় ১ হাজার বিঘা জমির বিভিন্ন ধরনের ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। দু’এক দিনের মধ‍্যে পানি নেমে না গেলে এই ফসল আর ঘরে উঠবে না।

মরিচ চাষি মনি বলেন, আমার এক বিঘা জমির মরিচের বেশ ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টি ও হাওয়ার কারণে অধিকাংশ গাছ পড়ে গেছে। আবহওয়া ঠিক হলেও এই ক্ষতি পূরণ করা সম্ভব না।
চাষিরা অভিযোগ করে বলেন, মাঠের সমস্ত পানি বের হওয়ার পথে সাইফুল ইসলাম নামের এক ব‍্যক্তির পুকুরের কারণে পানি বের হতে পারে না। বিষয়টি পুকুর মালিককে বলেও কোন প্রতিকার মেলেনি।

ফসলের ক্ষয়-ক্ষতির বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার জানান, গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ধান, পেঁপে, কলা ও গ্রীষ্মকালীন সবজিসহ মৌসুমি ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এখনই ক্ষতির পরিমান বোঝা যাচ্ছে না। মোট ক্ষয়ক্ষতি নিরূপনে কাজ চলছে।