Print Date & Time : 24 June 2025 Tuesday 3:04 am

টানা বাড়ছে এপেক্স স্পিনিংয়ের দর

নিজস্ব প্রতিবেদক: এপেক্স স্পিনিংয়ের শেয়ারদর তিন দিন ধরে টানা বাড়ছে। এ সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ১৫ টাকা। এর আগেও কোম্পানির দর টানা বেড়ে সর্বোচ্চ ১৫৪ টাকা ৩০ পয়সায় বেচাকেনা হয়েছে।

এদিকে টানা দর বাড়ার কারণে কোম্পানিটিকে নোটিশ দিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। নোটিশের জবাবে কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়, শেয়ারদর বাড়ার পেছনে কোনো ধরনের মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই। এরপরও দর বাড়ছে। তবে আর্থিক বছর শেষে কোম্পানিটির পর্ষদ সভার তারিখ ঘোষণার কারণে দর বাড়তে পারে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। তারা বলছেন, কোনো কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণার আগে শেয়ারদর বাড়ার একটা প্রবণতা লক্ষ করা যায়। এ কোম্পানিটির ক্ষেত্রেও তেমনটি হতে পারে।

প্রসঙ্গত, এপেক্স স্পিনিংয়ের আর্থিক বছর গত জুনে শেষ হয়েছে। আগামী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে পরিচালনা পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে নোটিশ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ওই সভায় কোম্পানির পুরো বছরের আর্থিক প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা করা হবে। আর ওই সভাকে কেন্দ্র করেই কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এর আগে কোম্পানিটির শেয়ারদর টানা বেড়ে পতন হওয়ায় অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তবে এবার যদি কোম্পানিটি ভালো লভ্যাংশ দেয়, তাহলে আগের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হলে বলে মনে করছেন বিনিয়োগকারীরা। এ পরিপ্রেক্ষিতে টানা শেয়ারদর বাড়া কোম্পানিটি বছর শেষে কী পরিমাণ লভ্যাংশ দিতে পারে, এর হিসাব-নিকাশ করছেন তারা। কারণ কোম্পানিটি তৃতীয় প্রান্তিকের প্রতিবেদনে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) আগের বছরের চেয়ে কমতে দেখা গেছে। আর এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে কোম্পানিটিকে লভ্যাংশ দিতে বেগ পেতে হবে বলে মনে করছেন তারা।

কোম্পানিটির লভ্যাংশের ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০১৪ সালে কোম্পানিটি ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। ওই বছর প্রকৃত মুনাফার হার (ইল্ড) দাঁড়িয়েছে দুই দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। পরের বছরও একই পরিমাণ লভ্যাংশ দেয় প্রতিষ্ঠানটি। ওই বছর প্রকৃত মুনাফার হার হয়েছিল দুই দশমিক ৮৩ শতাংশ। গত সমাপ্ত বছরে কোম্পানিটি ২২ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর প্রকৃত মুনাফার হার ছিল দুই দশমিক ৩৬ শতাংশ।

কোম্পানিটির তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০১৬ সালের জুলাই থেকে চলতি বছর মার্চ পর্যন্ত কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছিল দুই টাকা এক পয়সা, আগের বছর একই সময় ইপিএস হয়েছিল দুই টাকা ২৭ পয়সা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানির ইপিএস কমেছে ২৬ পয়সা। এ সময় মুনাফা এবং আয়ও সামান্য কমেছে।

তথ্যমতে, গত ৯ অক্টোবর কোম্পানিটির শেয়ার ১২৫ টাকা ৭০ পয়সা বেচাকেনা হয়েছে। গেল সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে কোম্পানির শেয়ার ১৪১ টাকা ৬০ পয়সায় বেচাকেনা হয়েছে। অর্থাৎ তিন দিনের ব্যবধানে কোম্পানির দর বেড়েছে ১৫ টাকা।

এর আগে গত সেপ্টেম্বরে কোম্পানির শেয়ার সর্বোচ্চ দরে বেচাকেনা হয়েছে। চলতি বছরের শুরুতে কোম্পানিটির শেয়ার ১০৬ টাকায় লেনদেন হয়। সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে কোম্পানির শেয়ার সর্বোচ্চ ১৫৪ টাকা ৩০ পয়সায় বেচাকেনা হয়েছে। অর্থাৎ ৯ মাসে কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে ৪৮ টাকা বা ৪৫ শতাংশ। পরবর্তী সময়ে কোম্পানির শেয়ারে প্রায় এক মাস পতনমুখী ধারা অব্যাহত ছিল। এর পরে গত তিন দিন টানা বেড়ে চলছে।

পুঁজিবাজারে ১৯৯৪ সালে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ৩০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন আট কোটি ৪০ লাখ টাকা। কোম্পানির শেয়ারসংখ্যা ৮৪ লাখ। এর মধ্যে পরিচালকদের কাছে ৫৭ দশমিক ২৯ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২১ দশমিক ৯৪ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে চার দশমিক ২৫ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৬ দশমিক ৫২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।