Print Date & Time : 27 June 2025 Friday 8:41 pm

টার্নওভার বেড়েছে দুর্বল মৌলভিত্তি কোম্পানির

নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজার উত্থান ও পতনের সঙ্গে সঙ্গে দুর্বল মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানির দরে প্রায়ই উল্লম্ফন লক্ষ্য করা যায়। চলতি মাসেও বেশ কিছু সময় বাজারে লোকসানি, দুর্বল মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানির দর বেড়েছে। এ ধারাবাহিকতায় সপ্তাহের ব্যবধানে ‘বি’ ক্যাটাগরির শেয়ারের টার্নওভার বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য পর্যালোচনায় এমনটিই জানা গেছে।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ‘বাজার ওঠানামা সঙ্গে হঠাৎ কিছু শেয়ার দরে উল্লম্ফন দেখা যায়। তবে বিনিয়োগের পূর্বে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। লোকসানি কোম্পানিতে বিনিয়োগ করলে তো ক্ষতিগ্রস্তের আশঙ্কা থাকে।’

ডিএসইর তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ফাইন ফুড লিমিটেড ‘বি’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে। সর্বশেষ প্রকাশিত দ্বিতীয় প্রান্তিকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ২২ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছিল ২১ পয়সা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি লোকসানে চলে গেছে। অপরদিকে কোম্পানিটির শেয়ার গতকাল সর্বশেষ ৩৯ টাকায় বেচাকেনা হয়েছে। গত ৫ ফেব্রুয়ারি কোম্পানির শেয়ার ২৮ টাকা ৮০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। অর্থাৎ মাত্র আট কার্যদিবসে কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে ১০ টাকা ২০ পয়সা বা ৩৫ শতাংশ। এতে কোম্পানিটি সাপ্তাহিক দর বাড়ার শীর্ষ তালিকায়ও উঠে এসেছে।

অপরদিকে, মেট্রো স্পিনিং মিলস লিমিটেডের সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানিটি ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর ছয় মাসে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে আট পয়সা। আগের বছর একই সময়ে লোকসান হয়েছিল ২৯ পয়সা। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে লোকসানের বৃত্ত থেকে বের হতে পারেনি কোম্পানিটি। গতকাল কোম্পানির শেয়ার সর্বোচ্চ ১৩ টাকা ৯০ পয়সায় বেচাকেনা হয়েছে। গত ৮ ফেব্রুয়ারির পর থেকে কোম্পানির শেয়ারদর টানা বাড়ছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি বছরের শুরু থেকে বাজারে লেনদেনে মন্দাভাব বিরাজ করছে। এরপর থেকে দুয়েকদিন লেনদেন ইতিবাচক থাকলেও তা অব্যাহত ছিল না। তাছাড়া ব্যাংকের আমানতের সুদের হার বাড়ার কারণে অনেক বাজার বিমুখ হচ্ছে। এতে বাজারে লেনদেন আরও নেতিবাচক ধারা লক্ষ্য করা গেছে। আর এই অবস্থায় দুর্বল ও লোকসানি কোম্পানির দর বাড়ছে। এসব কোম্পানি স্বল্প মূলধনী হওয়ার কারণে কোনো অসৎ চক্র জড়িত থাকার আশঙ্কা করছেন তারা। তবে এসব শেয়ারে বিনিয়োগের পূর্বে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন তারা।

তথ্যমতে, গেল সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মোট টার্নওভার হয়েছে দুই হাজার ৫৭৯ কোটি ১২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। এর মধ্যে ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলোর টার্নওভার দাঁড়িয়েছে ১৫৯ কোটি সাত লাখ আট হাজার টাকা। এছাড়া লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ হয়ে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে এমন সব কোম্পানির টার্নওভারের পরিমাণ ছিল ১০২ কোটি ২৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। আগের সপ্তাহে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করা কোম্পানিগুলোর টার্নওভার হয়েছিল ৭৯ কোটি টাকা। আলোচিত সময়ে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে অবস্থানরত কোম্পানির টার্নওভার হয়েছিল ৫৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে ‘বি’ ও ‘জেড’ ক্যাটাগরির টার্নওভার বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।