টিআইবির প্রতিবেদন: সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হতে লাগে ঘুষ

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় প্রভাষক নিয়োগে পদে পদে অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরল দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক নিয়োগে ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আটটিতে তিন থেকে ২০ লাখ টাকা লেনদেনের অভিযোগ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে টিআইবি।

রাজধানীর ধানমন্ডিতে মাইডাস সেন্টারে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে টিআইবি। ‘সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক নিয়োগ: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এ গবেষণা প্রতিবেদনের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন টিআইবির দুই গবেষক দিপু রায় ও রেযাউল করিম।

সংস্থাটি বলেছে, ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করে দেখা গেছে, আটটি বিশ্ববিদ্যালয়েই প্রভাষক নিয়োগে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। এ পদে নিয়োগে তিন লাখ থেকে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেন হয়েছে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সার্বিক চিত্রটি হতাশাব্যঞ্জক ও উদ্বেগজনক। তিনি প্রভাষক নিয়োগে সমন্বিত ও পূর্ণাঙ্গ নিয়োগ বিধিমালা করার দাবি জানান।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, নিয়োগের আগে থেকেই বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম শুরু হয়। নিয়োগ বোর্ড গঠন, সুবিধামতো যোগ্যতা পরিবর্তন বা শিথিল করা, জবাবদিহি না থাকার মাধ্যমে এ অনিয়মের শুরুটা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ বোর্ড গঠনে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের মতাদর্শের সুযোগ বিদ্যমান ছিল। নিয়োগের আগে আরও যেভাবে অনিয়ম শুরু হয় তারও কিছু চিত্র তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, কোনো কোনো শিক্ষক পছন্দের শিক্ষার্থীদের একাডেমিক পরীক্ষার ফল প্রভাবিত করেন এবং পরবর্তী সময়ে এদের নিয়োগ দেওয়া হয়। এছাড়া বাজার করাসহ ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে আগে থেকেই একাডেমিক পরীক্ষার সম্ভাব্য প্রশ্ন সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়। ক্ষেত্রবিশেষে নারী শিক্ষার্থীর একাংশের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে একাডেমিক পরীক্ষার নম্বর বাড়িয়ে দেওয়া, পরীক্ষার আগে প্রশ্ন জানানো ও পরবর্তী সময়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এসব অনিয়মের কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নোট অব ডিসেন্টের সুযোগ থাকলেও সেটিকে গুরুত্ব না দিয়ে সিন্ডিকেট নিয়োগ চূড়ান্ত করে।

সম্মেলনে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক নিয়োগে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত গবেষণার তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য ওঠে আসে। অর্থ লেনদেনের সঙ্গে ভিসি, শিক্ষক নেতা, রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মকর্তা, বিশেষজ্ঞ, ছাত্রনেতাসহ ক্ষমতাসীন দলের নেতারা জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সংবাদ সম্মলনে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির চেয়ারম্যান ইফতেখারুজ্জামান, প্রোগ্রাম ম্যানেজার রেজাউল করিম ও দিপু রায়, ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোস্তফা কামাল, টিআইবির সদস্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম প্রমুখ।

 

 

 

Add Comment

Click here to post a comment

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০