Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 3:47 am

টিকার বিকল্প নয় দেশের বাজারে কভিডের ক্যাপসুল

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে মুখে খাওয়ার ওষুধ ‘মলনুপিরাভির’ নামের ক্যাপসুল বাজারজাত করতে শুরু করেছে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান এ তথ্য জানান।

গতকাল মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এছাড়া এসকেএফ ও স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ওষুধ তৈরি ও বাজারজাত করার জন্য অনুমোদন পেয়েছে। দেশের বাজারে এ ওষুধ পাওয়া যাবে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে। এই প্রথম মুখে খাওয়ার কোনো অ্যান্টিভাইরাল আমাদের দেশে এলো। মলনুপিরাভির এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যে অনুমোদন পেয়েছে। গত সোমবার আমরা বেক্সিমকোকে এবং আজ এফকেএফকে ইমারজেন্সি ইউজ এবং মার্কেটিং অথরাইজেশন দিয়েছি। আমরা মনে করি, এ ওষুধ কভিড মহামারি দূর করতে ভূমিকা পালন করবে।

‘উন্নয়নশীল দেশ’ হিসেবে কিছু ওষুধের ক্ষেত্রে ‘মেধাস্বত্ব ছাড়ের’ সুযোগ থাকায় বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো দ্রুত এ ওষুধ আনতে পারছে বলে তিনি জানান।

ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, প্রতিদিন দুই বেলা চারটি করে আটটি ক্যাপসুল খেতে হবে। এই ওষুধের কোর্স চলবে পাঁচ দিন। ২০০ মিলিগ্রামের প্রতিটি ক্যাপসুলের দাম পড়বে ৫০ টাকা। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এ ওষুধ খেতে হবে।

বেক্সিমকো ফার্মার চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) রাব্বুর রেজা জানান, প্রতিটি ওরাল পিলের বাজারমূল্য ধরা হয়েছে ৭০ টাকা। চিকিৎসকের পরামর্শে ১৮ বছরের বেশি বয়সী কভিড-আক্রান্ত রোগীকে ৪০টি পিল খেতে হবে, যার বাজারমূল্য দুই হাজার ৮০০ টাকা।

ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, দেশে মলনুপিরাভির অ্যান্টিভাইরাল ক্যাপসুল জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তবে এগুলো অবশ্যই টিকার বিকল্প নয়। টিকা নিতে হবে। তবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এ অ্যান্টিভাইরাল ক্যাপসুল খাওয়া যাবে।

মাহবুবুর রহমান বলেন, আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত ১০টি প্রতিষ্ঠান মলনুপিরাভির উৎপাদনের জন্য অনুমোদন চেয়ে আবেদন করেছে। এরই মধ্যে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ও এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালসকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। আরও আটটি প্রতিষ্ঠান অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। সেগুলো হলো স্কয়ার, জেনারেল, বিকন, রেনেটা, ইনসেপটা, একমি, হেলথ কেয়ার ও পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস।

ওষুধের ব্যবহারবিধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মুখে খাওয়ার এই ওষুধ পাঁচ দিনের ডোজ। সকালে চারটা আর রাতে চারটা। পাঁচ দিনে মোট চল্লিশটা ক্যাপসুল খেতে হবে।

মহাপরিচালক বলেন, কোনোভাবেই ১৮ বছরের নিচে এই ওষুধ ব্যবহার করা যাবে না।

যুক্তরাষ্ট্রের দুই কোম্পানি মার্ক শার্প অ্যান্ড ডোম (এমএসডি) ও রিজেবাক বায়োথেরাপিউটিক যৌথভাবে তৈরি করেছে লাগেভ্রিও (মলনুপিরাভির) নামে মুখে খাওয়ার এই ওষুধ।

এর আগে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগে তাদের তৈরি ওষুধ মলনুপিরাভির মারাত্মক ঝুঁকিতে থাকা কভিড রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়া বা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার হার ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনতে পারছে বলে প্রমাণ মিলেছে।

গত বৃহস্পতিবার কভিড উপসর্গের চিকিৎসায় মুখে খাওয়ার প্রথম ওষুধটি যুক্তরাজ্যের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা মেডিসিনস অ্যান্ড হেলথকেয়ার রেগুলেটরি এজেন্সির (এমএইচআরএ) অনুমোদন পেয়েছে।