Print Date & Time : 16 June 2025 Monday 8:30 pm

টিসিবির জন্য ৬৯১ কোটি টাকার পণ্য কিনছে সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক: রোজার মাসে ক্রেতাদের সুলভ মূল্যে পণ্য সরবরাহ নির্বিঘ্ন রাখতে ছোলা, ডাল, চিনি ও সয়াবিন তেলের সংগ্রহ বাড়াচ্ছে সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবি। গতকাল বৃহস্পতিবার সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবির জন্য এ চারটি পণ্যের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠকে ১৪ হাজার টন চিনি, ১০ হাজার টন ছোলা, ১৯ হাজার ৫০০ টন মসুর ডাল এবং এক কোটি ৭১ লাখ ১৫ হাজার ৬৫২ লিটার সয়াবিন তেল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন পায়। এ জন্য মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৬৯১ কোটি ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৫৩৬ টাকা।

বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘টিসিবি আমাদের অর্থনীতির একটি ব্যাকবোন। পণ্যের উৎপাদন যেমন দরকার, তেমনিভাবে সময়মতো ভোক্তাদের কাছে পণ্য পৌঁছে দিতে হয়। পৃথিবীতে এখন জিনিসপত্রের অভাবে বিপদ ঘটে না। বিপদ ঘটে সময়মতো পণ্য সরবরাহ করতে না পারলে। সে জন্য টিসিবির রোলটা এখন গুরুত্বপূর্ণ। এর ক্যাপাসিটি আরও বাড়ানো হচ্ছে।’

সরকারি এ বিপণন সংস্থার মাধ্যমে আরও বেশি মানুষকে সুবিধা দেয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি ইউনিয়নে আমরা টিসিবিকে নিয়ে যাব। এবার রোজায় এক কোটি পরিবারের কাছে টিসিবির পণ্য পৌঁছে দিতে চাই।’

ইতোমধ্যে কয়েকটি পণ্যের ওপর থেকে এক বা একাধিক পর্যায়ে ভ্যাট প্রত্যাহার করে নেয়ার পাশাপাশি টিসিবির বিপণন সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

মন্ত্রিপরিষদের অতিরিক্ত সচিব মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী জানান, মেঘনা সুগার রিফাইনারি থেকে ৫৫ কোটি ৩০ লাখ টাকায় সাত হাজার টন চিনি এবং একই দামে সিটি সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে সমপরিমাণ চিনি কেনার অনুমোদন হয়। অর্থাৎ ১১০ কোটি ৬০ লাখ টাকায় মোট ১৪ হাজার টন চিনির ক্রয়াদেশে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সে ক্ষেত্রে ভ্যাট এবং ট্যাক্সসহ প্রতি কেজির দাম পড়ছে ৭৯ টাকা।

এ ছাড়া ৮১ কোটি ৪০ লাখ টাকায় ছোলা কেনা হচ্ছে ১০ হাজার টন। সেনা কল্যাণ সংস্থা, ব্লু স্কাই এন্টারপ্রাইজ ও রুবি ফুড প্রডাক্ট পণ্যগুলো সরবরাহ করবে। এতে প্রতি কেজি ছোলার দাম পড়ে ৮১ দশমিক ৪০ টাকা।

মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ২১১ কোটি ৫৭ লাখ ৫০ হাজার টাকায় ১৯ হাজার ৫০০ টন মসুর ডাল কেনারও অনুমোদন দেয়া হয়। এতে প্রতি কেজির দাম পড়ছে ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা।

প্রতি লিটার ১৬৮ টাকা দরে এক কোটি ৭১ লাখ ১৫ হাজার ৬৫২ লিটার সয়াবিন তেল কেনার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে মোট খরচ হচ্ছে ২৮৭ কোটি ৫৪ লাখ ২৯ হাজার ৫৩৬ টাকা।

সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির গতকাল বৃহস্পতিবারের বৈঠকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের প্রস্তাবে ৬০টি ‘মাল্টিপল এক্সেসেবল রেসকিউ বোট’ কেনারও অনুমোদন দেয়া হয়। নৌবাহিনী পরিচালিত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ‘ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড’-এর কাছ থেকে সরাসরি কেনা হচ্ছে এসব নৌযান।

এছাড়া অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এদিন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের ‘কয়লা/বাল্ক টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প’ সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব-পিপিপি তালিকা থেকে বাতিলের প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়া হয়।

এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘কয়লা টার্মিনাল নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। প্রথম দিকে যে ধরনের আলোচনা হয় তখন এক ধরনের বিশ্বাস নিয়ে আমরা প্রস্তাবে সায় দিয়েছিলাম। পরে দেখা গেল চাহিদা ও ডিমান্ডের মধ্যে কিছু মিসম্যাস হচ্ছে। সে জন্য কোল বেইজড পাওয়ার প্লান্ট ডিসকারেজ করা হচ্ছে। কোল বেইজড পাওয়ার প্লান্টের লং টার্ম বেনিফিটটা আমাদের পক্ষে যায় না। সে জন্য প্রাইমিনিস্টার অফিস থেকে বলা হয়, এখান থেকে সরে আসার জন্য। এখন যেভাবে অর্থনৈতিকভাবে ভায়াবল হয়, জাস্টিফায়েড হয়, বেশি বেনিফিট পাওয়া যায় সেসব কিছুর পরিকল্পনায় আমরা এটাকে বাদ দিয়েছি।