ক্রীড়া প্রতিবেদক: প্রতিপক্ষ যেমনই হোক, জয়টাই বড় কথা। শুরুতে টেস্ট। পরে ওয়ানডে। এবার টি-টোয়েন্টিতেও লেখা হলো বাংলাদেশের সাফল্যগাধা। একেবারে হেসেখেলে এ ফরম্যাটের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচও জিতে টাইগাররা। এর ফলে ২০ ওভারের ক্রিকেটেও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশের তৃপ্তি পায় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে গতকাল টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচ বাংলাদেশ জিতে ৯ উইকেটে। এর ফলে দুই ম্যাচের সিরিজ ২-০ তে নিজেদের করে নেয় টাইগাররা। এর আগে জিম্বাবুয়েকে এক ম্যাচের টেস্ট ও তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের সবকটিতেই হারিয়েছিল রাসেল ডমিঙ্গোর শিষ্যরা।
সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে গতকাল টাইগারদের জিততে দরকার ছিল মাত্র ১২০ রান। লক্ষ্য তাড়ায় ১০.৪ ওভারে ৭৭ রান তুলে যে কাজটি অকেটাই সহজ করে দেন মোহাম্মদ নাঈম ও লিটন দাস। পরে নাঈম ৩৪ বলে ৩৩ রান করে ফিরলেও লিটন অন্য প্রান্তে ছিলেন তার মতোই। একপর্যায়ে এ ডানহাতি ক্যারিয়ারের চতুর্থ হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন মাত্র ৩৫ বলে। শেষ পর্যন্ত তার ব্যাটে ভর করে টাইগাররা জিতে যায় ২৫ বল আর ৯ উইকেট হাতে রেখে। লিটন অপরাজিত ছিলেন ৪৫ বলে ৬০ রানে। তার ইনিংসে ছিল ৮টি চার। অন্য প্রান্তে সৌম্য অপরাজিত ছিলেন ১৬ বলে ২ ছয়ে ২০ রানে।
বাংলাদেশের জয়ের ভিত গতকাল শুরুতেই করে দিয়েছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান, মেহেদী হাসানরা, আল আমিন হোসেনরা। যে কারণে নির্ধারিত ২০ ওভারে জিম্বাবুয়ে ৭ উইকেটে ১১৯ রানে থামতে বাধ্য হয়। পরে সহজ লক্ষ্য তাড়ায় শুরু থেকে দুর্দান্ত ব্যাট চালান তামিমের পরিবর্তে সুযোগ পাওয়া মোহাম্মদ নাঈম ও লিটন দাস। প্রথমদিকে অবশ্য রান তোলায় এগিয়ে ছিলেন নাঈম। কিন্তু পরে এ বাঁহাতি একটু ধীরে চলতে থাকেন। ঠিক সে সময় লিটন ফেরেন স্বরূপে। এরই একপর্যায়ে নাঈম ৩৪ বলে ৫ চারে ৩৩ রানে এমপফুর বলে বড় শর্ট খেলতে গিয়ে সীমানায় ধরা পড়েন কামুনহুকামউইয়ের হাতে। এরপরের গল্প শুধুই লিটনের। দ্বিতীয় উইকেটে এ ডানহাতি সৌম্য সরকারকে নিয়ে অবিচ্ছিন্ন ৪৩ রানের জুটি গড়ে ম্যাচ জিতিয়েই ফেরেন।
এর আগে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের পিচ স্পিনবান্ধব। কিন্তু সেখানেই গতকাল টস জিতে চার পেসার নিয়ে আগে ফিল্ডিংয়ে নামে বাংলাদেশ। যে কারণে শুরুতে সবাই মাহমুদউল্লাহকে কাঠ গড়ায়ও হয়তো তুলেছিলেন। কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তিনি প্রমাণ করেন তার সিদ্ধান্ত সঠিক। তাই তো শুরুতেই জিম্বাবুয়ে ওপেনার তিনাশে কামুনহুকামউইকে তুলে নেন আল-আমিন।
গতকাল পাওয়ার প্লের প্রথম ৬ ওভারে জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানদের আটকে রেখেছিলেন বাংলাদেশি বোলাররা। এ সময় ১ উইকেটে ৩১ রান তুলতে পারে জিম্বাবুয়ে। পরে অবশ্য কিছুটা সময় ক্রেগ আরভিন ও টেইলরের দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে বাড়ে রানের গতি। ১০ ওভার শেষে সফরকারীদের সংগ্রহ ছিল ১ উইকেটে ৬২ রান। কিন্তু ১২ থেকে ১৭তম ওভারের মধ্যে দলটির ৪ উইকেট তুলে নিয়ে দারুণভাবে ম্যাচে ফেরে টিম টাইগার্স। এর মধ্যে নিজের প্রথম ওভারে প্রথম বলেই উইকেট পেয়েছেন আফিফ। আরভিনকে (২৯) ক্যাচে পরিণত করেন সৌম্যর। টেলর এক প্রান্ত ধরে রাখলেও অধিনায়ক শন উইলিয়ামস-সিকান্দার রাজারা কেউ টিকতে পারেননি। সিকান্দার নিজের দ্বিতীয় বলে সৌম্যর হাতে ‘জীবন’ পেলেও আউট হন মাত্র ১২ রান করে। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের সেøায়ার বুঝতে না পেরে ক্যাচ দেন তিনি। শেষ দিকে রানের গতি বাড়াতে চেষ্টা করেন টেইলর ও মুম্বা। কিন্তু দলীয় স্কোর বোর্ডে তারা ১১৯ রানের বেশি যোগ করতে পারেনি।
বাংলাদেশের সেরা বোলার মোস্তাফিজুর রহমান ও আল-আমিন। ২৫ রানে ২ উইকেট নেন মোস্তাফিজ। ২২ রানে ২ উইকেট আল-আমিনের। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন মেহেদী হাসান, আফিফ হোসেন ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। এদিকে ৪ ওভারে ২৫ রান দিয়ে উইকেট শূন্য ছিলেন অভিষিক্ত হাসান মাহমুদ।