ক্রীড়া প্রতিবেদক: হঠাৎ করেই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। গতকাল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে কলম্বোতে টসের সময় ডিন জোন্সকে এ কথা বলেন ম্যাশ। চলতি সফরের দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টির পর ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে এ ডানহাতি পেসারকে আর দেশের জার্সিতে দেখা যাবে না। টাইগার রঙিন পোশাকের অধিনায়কের মনে হয়েছে, এ ফরম্যাট থেকে তার সরে যাওয়ার এটাই সেরা সময়।
গতকাল টসের সময় মাশরাফি বলেন, ‘এটাই আমার আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির শেষ সিরিজ। আমি ধন্যবাদ দিতে চাই বিসিবি, আমার পরিবার, বন্ধু, সতীর্থ ও কোচিং স্টাফদের। বিশেষভাবে ধন্যবাদ দিতে চাই আমার ভক্তদের, যারা আমার শেষ ১৫-১৬ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে সত্যিকারের সমর্থন করেছেন।’
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেছেন মাশরাফি। তার অধীনে ক্রিকেটের এ সংস্করণে টাইগাররা জিতেছে ৯টিতে। দেশের জার্সিতে এ পর্যন্ত ৫৩টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ৩৭.৫৬ গড়ে এ ডানহাতি পেসার নিয়েছেন ৩৯ উইকেট। যেখানে একবারই তিনি ২০১২
সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন। বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিংয়ে অবদান রেখেছিলেন ম্যাশ। ৩৭ ইনিংসে তার ২৩ ছক্কা তারই প্রমাণ দেয়।
ক্রিকেটের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ইএসপিএন-ক্রিকইনফো মাশরাফির অবসর সম্পর্কে বলেছে, আগে দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে টি-টোয়েন্টি থেকে নিজের অবসর ভাবনা আলোচনা করেছেন মাশরাফি। এরপর তিনি তার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। এছাড়া কয়েক দিন আগে তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটে দলকে ঢেলে সাজানোর কথা বলেছিলেন বিসিবি কর্তারা। ম্যাশের অবসরের পেছনে এটাও একটা কারণ হতে পারে। তরুণ ক্রিকেটারদের সুযোগ দিতেই হয়তো তিনি টি-টোয়েন্টি ছাড়লেন।
টি-টোয়েন্টি ছাড়লেও দেশের হয়ে ওয়ানডে ঠিকই খেলে যাবেন মাশরাফি। তার নেতৃত্বে আগামী আয়ারল্যান্ডে তিন জাতি ক্রিকেট টুর্নামেন্টে অংশ নেবে বাংলাদেশ। পরের মাসে ইংল্যান্ডে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলবে টাইগাররা।
টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের খবরটি নিজের ফেসবুক পেইজে ভক্তদের জানিয়েছেন মাশরাফি। সেখানে একটি ছবি দিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ টিমকে টি-টোয়েন্টি ইন্টারন্যাশনালে ১০ বছরের বেশি সময় ধরে প্রতিনিধিত্ব করা আমার জন্য অনেক গর্বের। আমি বিশ্বাস করি বর্তমান দলটি একটি ভালো দল এবং দলে কিছু উদীয়মান খেলোয়াড় আছে। আমার ওপর আস্থা রাখার জন্য এবং আমাকে এত চমৎকার দলের নেতৃত্ব প্রদানের সুযোগ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের প্রতি আমি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ। আমি আমার সব ভক্ত, পরিবার এবং বন্ধুদের প্রতি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ, আমাকে সবসময় সমর্থন করার জন্য। এই সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে উত্থান এবং পতন ছিল। আমি সবসময় চেষ্টা করেছি আমার ফ্যানদের খুশি করার। আমি আমার প্রত্যেক ফ্যানের কাছে তাদের প্রতিম্যাচে খুশি করতে না পারার জন্য ক্ষমা চাইছি। এ মুহূর্তে দল হিসেবে আমরা ভালো খেলছি। আমি নিশ্চিত বাংলাদেশ সামনের দিনগুলোতেও ভালো ক্রিকেট খেলবে।
আমি মনে করি টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে অবসর নেওয়ার জন্য এটাই আমার উপযুক্ত সময়, যাতে অনেক উদীয়মান তরুণ ক্রিকেটার তাদের প্রতিভা তুলে ধরতে পারে এবং বিসিবি তাদের সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে পারে। আমি বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি টিমের নতুন অধিনায়ককে আগাম অভিনন্দন জানাই এবং আমি নিশ্চিত বাংলাদেশ ক্রিকেটের সেরা সময় সামনে আসবে।শিগগিরই আবার দেখা হবে। সবার জন্য আমার আন্তরিক ভালোবাসা।
Add Comment