টি-টোয়েন্টিতে ৭ উইকেটে হারল বাংলাদেশ

শেয়ার বিজ ডেস্ক: বৃষ্টির কারণে উইন্ডিজের ইনিংস শুরু হতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছিল। বাংলাদেশ নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৪৩ রান সংগ্রহ করলেও উইন্ডিজের সামনে নতুন লক্ষ্য নির্ধারিত হয় ১১ ওভারে ৯১ রান। সে লক্ষ্যে হেসেখেলেই পৌঁছে গেছে স্বাগতিকরা। মারলন স্যামুয়েলস, আন্দ্রে রাসেলের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ১১ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে গেছে ক্যারিবীয়রা।

৯৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারে ১০ রান সংগ্রহ করেছিল স্বাগতিকরা। কিন্তু দ্বিতীয় ওভারেই জোড়া ধাক্কা দেন মুস্তাফিজুর রহমান। এক ওভারেই তুলে নেন দুই উইন্ডিজ ওপেনার এভিন লুইস ও আন্দ্রে ফ্লেচারের উইকেট। তবে এরপর ঝড়ো ব্যাটিং করে দলকে জয়ের পথে নিয়ে গেছেন আন্দ্রে রাসেল ও মারলন স্যামুয়েলস। ২১ বলে ৩৫ রান করে অপরাজিত ছিলেন রাসেল। আর স্যামুয়েলসের ব্যাট থেকে এসেছে ২৬ রান। দুটি ছয় মেরে ৯ বলে ১৫ রান করেছেন রোভমান পাওয়েল।

টেস্ট, ওয়ানডের পর এবার উইন্ডিজ সফরের টি-টোয়েন্টি সিরিজে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। আজ প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে শুরুতে ব্যাটিং করে স্কোরবোর্ডে ১৪৩ রান জমা করেছে টাইগাররা। তবে বোলিংয়ে নামার জন্য অপেক্ষাই করতে হচ্ছে সাকিবদের। সেন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কের মাঠ অনেকক্ষণ ঢেকে রাখা হয়েছিল বৃষ্টির জন্য। বৃষ্টি শেষে অবশ্য মাঠে গড়িয়েছে ব্যাট-বলের লড়াই।

এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি। ওপেনার তামিম ইকবাল ইনিংসের প্রথম বলেই আউট হয়ে যান। তিন বল পর শূন্য রানে ফিরেছেন আরেক ওপেনার সৌম্য সরকারও। ম্যাচের প্রথম ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে যে বিপর্যয়ে পড়ে লাল-সবুজের দল, সে অবস্থা থেকে খুব একটা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে তাই সাকিব-তামিম গড়েছেন ১৪৩ রান।

আজ বুধবার সেন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে শুরু থেকেই দলের ব্যাটসম্যানরা যখন আসা-যাওয়ায় ব্যস্ত, অবশ্য ব্যতিক্রম ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। ছয় নম্বরে ব্যাট করতে নামা এই্ অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান দারুণ দৃঢ়তা দেখিয়ে একপাশ আগলে রেখেছেন। খেলেছেন ৩৫ রানের একটি দারুণ ইনিংস, যাতে তিনটি চার ও দুটি ছক্কার মার ছিল।

এর আগে ওয়ান ডাউনে নামা লিটন দাস ২১ বলে ২৪ রানের একটি ইনিংসে খেলেন। তাঁর এই ইনিংসে ছিল তিনটি চারের মার। উল্লেখযোগ্য ছিল অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের ১০ বলে ১৯ রানের ইনিংসটি। তবে আশা জাগিয়েও মুশফিকুর রহিম (১৫) ও তরুণ আরিফুল হক (১৫) খুব একটা জ্বলে উঠতে পারেননি। তরুণ মেহেদী হাসান মিরাজ ১১ রান করেন।

কেসরিক উইলিয়ামস ২৮ রানে চার উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। এ ছাড়া অ্যাশলি নার্স ও কিমো পল দুটি করে উইকেট নিয়েছেন। একটি উইকেট পান আন্দ্রে রাসেল।

প্রথমে ব্যাট করে ১৪৩ রান করে বাংলাদেশ।জবাবে শিডউল অনুযায়ী খেলা শুরু হওয়ার কথা ছিল।তবে বৃষ্টি বাগড়ায় তা সম্ভব হয়নি। বৃষ্টি থামলে খেলা শুরু হয় প্রায় আধা ঘণ্টা পর। এতে ইনিংসের পরিধি কমে আসে ১১ ওভারে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৯১ রান।তবে শুরুতেই ঝাটকা খায় ক্যারিবীয়রা। তোপ দাগান মোস্তাফিজুর রহমান। নিজের প্রথম ওভারেই ফিরিয়ে দেন লুইস (২) ও ফ্লেচারকে (৭)।

শুরুতেই দুই ওপেনার ফিরলেও চোখ রাঙাতে থাকেন স্যামুয়েলস।দ্রুতগতিতে রান তোলেন তিনি। একের পর এক বাউন্ডারিতে টাইগার বোলারদের কাঁপিয়ে ছাড়েন এ হার্ডহিটার। দলীয় ৫২ রানে মাহমুদউল্লার তালুবন্দি করে তাকে ফেরান রুবেল। ততক্ষণে ২ চার ও ২ ছক্কায় ১৩ বলে ২৬ রানের ইনিংস খেলে দলকে জয়ের ভিত গড়ে দেন স্যামুয়েলস।

বাকি কাজটুকু সারেন রাসেল ও রোভম্যান।বাংলাদেশের বোলারদের তুলোধোনা করে ১১ বল হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করেন তারা। রাসেল খেলেন ২১ বলে সমান ৩টি করে চার-ছক্কায় ৩৫ রানের হার না মানা বিধ্বংসী ইনিংস। ৯ বলে ২ ছক্কায় ১৫ রান করে অপরাজিত থাকেন রোভম্যান।

বুধবার সেন্ট কিটসে টস জিতে প্রথমে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক কার্লস ব্র্যাথওয়েট। তবে শুরুটা ভালো হয়নি টাইগারদের।ইনিংসের প্রথম বলেই নার্সের শিকার হয়ে ফেরেন তামিম (০)। ফের ব্যর্থ সৌম্য (০)।কোনো রান না করেই নার্সের স্পিন ভেলকিতে কুপোকাত হয়ে ফেরেন তিনি।

এরপর সাকিবকে নিয়ে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন লিটন।এতে প্রাথমিক বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠে বাংলাদেশ।তাদের ব্যাটে ভর করে এগিয়ে যাচ্ছিল সফরকারীরা।তবে হঠাৎই ছন্দপতন। ষষ্ঠ ওভারে পলের লোভনীয় শর্ট বলে লোভ সামলাতে না পেরে ফেরেন লিটন (২৪) ও সাকিব (১৯)।ফের চাপে পড়ে বাংলাদেশ।

সেই চাপের মধ্যে লড়েন মাহমুদউল্লাহ। তাকে যোগ্য সহযোদ্ধার সমর্থন দেন মুশফিক। এতে বাড়ে রানের গতি। বাংলাদেশও এগোচ্ছিল ঝড়ো গতিতে। তবে হঠাৎই হার মানেন মুশফিক (১৫)।কেসরিকের শর্ট বলে লালসা মেটাতে গিয়ে ফেরেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল।

কিছুক্ষণ পরই যাওয়া-আসার মিছিলে যোগ দেন আরিফুল (১৫)। রাসেলের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি।তবু বুক চিতিয়ে লড়ে লড়ে যাচ্ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। দলীয় ১২৫ রানে কেসরিকের অসাধারণ ডেলিভারিতে লড়াই থামে তার। ফেরার আগে ২৭ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৩৫ রানের ইনিংস খেলেন মিস্টার কুল।

শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ১৪৩ রান তুলতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ।রুবেল ২ ও মোস্তাফিজ ৩ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন। এর আগে মিরাজ (১১) ও নাজমুল (৭) কেসরিকের শিকার হন। এদিন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেরা বোলার কেসরিকই। প্রথমে নার্স (২ উইকেট) জাদু দেখালেও ৪ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে আসল ছোবলটা দেন তিনিই।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০