প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ঘরে ঘরে বাড়ছে চোখ ওঠা রোগীর সংখ্যা। ১৫ দিন ধরে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি গ্রামেই এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। পরিবারের কোনো সদস্য চোখ ওঠা রোগে আক্রান্ত হলে পরদিন অন্য সদস্যারাও আক্রান্ত হচ্ছে। তাই চোখের
এ ছোঁয়াচে রোগ নিয়ে মানুষ ভিড় করছে হাসপাতালসহ চোখের চিকিৎসা কেন্দ্র ও গ্রাম্য চিকিৎসকদের কাছে। কিন্তু রোগীরা ব্যবস্থাপত্র নিয়ে ফার্মেসিতে গেলেও মিলছে না চোখের ড্রপ। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে রোগীরা।
জানা যায়, ড্রপের সঙ্গে সঙ্গে চাহিদা বেড়েছে কালো চশমার। কারণ কোনো ব্যক্তি চোখ ওঠা ব্যক্তির চোখের দিকে তাকালেই তিনিও আক্রান্ত হচ্ছেন এই ছোঁয়াচে রোগে। ওষুধ ব্যবসায়ীদের দাবি, কোম্পানিগুলোয় অর্ডার দিলেও মিলছে না চোখের ড্রপ।
উপজেলার পাটগাতী বাজারের চোখের ড্রপ কিনতে আসা মচন্দপুর গ্রামের তরিকুল ইসলাম বলেন, চার দিন আগে হঠাৎ করে চোখ লাল ও ব্যথা অনুভূত হয়। পরের দিন চোখ ফুলে ওঠে। তখন চিকিৎসককের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থাপত্র নিয়ে অনেক ফার্মেসি ঘুরেও ড্রপ পেলাম না। বেশি টাকা দিতে চাইলেও মিলছে না ড্রপ।
উপজেলার গওহরডাঙ্গা গ্রামের জাহিদ হোসেন বলেন, পরিবারের একজনের চোখ ওঠার পর এক দিনের ব্যবধানে সবাই এ রোগে আক্রান্ত হয়। তখন উপজেলার বেশ কয়েকটা বাজারে ঘুরেও ড্রপ পেলাম না। তখন ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ খেয়ে ভালো হয়েছি।
টুঙ্গিপাড়ার ওষুধ ব্যবসায়ী মহিব বিশ্বাস বলেন, অল্প কিছু চোখের ড্রপ ছিল। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হওয়ায় মুহূর্তের মধ্যে শেষ হয়ে গেছে। আর বিভিন্ন কোম্পানিতে চোখের ড্রপ অর্ডার করলেও তারা সরবরাহ করছে না। তাই আমরাও রোগীদের ড্রপ দিতে ব্যর্থ হচ্ছি।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জসিম উদ্দিন বলেন, চোখের কনজাংটিভা নামক পর্দার প্রদাহজনিত কারণে এই রোগে অধিকাংশ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। এটা একটা ছোঁয়াচে রোগ। তাই আমরা সবাইকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থেকে চোখে কালো চশমা ব্যবহার করার পরামর্শ দিচ্ছি। আর চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ খেলেই কয়েক দিনে সুস্থ হওয়া সম্ভব। তিনি বলেন, হাসপাতালের ভিশন সেন্টারে চোখের ড্রপসহ বিভিন্ন ওষুধ ও চোখের সেবা বিনা মূল্যে দেয়া হচ্ছে।