টেকসই জ্বালানি ব্যবস্থাপনায় এ বছরই এসপিএম প্রকল্প চালু

শেয়ার বিজ ডেস্ক: চলতি বছরের মধ্যে সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) প্রকল্পের কার্যক্রম শুরুর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আমদানিকৃত পেট্রোলিয়াম তেল জাহাজ থেকে স্টোরেজ হাউসে আনলোড করার নতুন যুগে প্রবেশ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এসপিএম দেশের জ্বালানি ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থাকে আরও সাশ্রয়ী, টেকসই ও পরিবেশবান্ধব করে তুলবে।

প্রকল্প কর্মকর্তা মনজেদ আলী শান্ত বলেন, ‘এসপিএম প্রকল্পটি চলতি বছরের মধ্যে চালু করা হবে ইতোমধ্যেই এর ৯৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ লক্ষ্যে এরই মধ্যে প্রকল্পটির পৃথক পরীক্ষা চালানো হয়েছে।’

এসপিএম প্রকল্পের সাইটে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করার সময় তিনি বলেন, আমদানিকৃত পেট্রোলিয়াম তেল অফলোড করতে মাত্র ৪৮ ঘণ্টা সময় লাগবে, যা আগে প্রচলিত পদ্ধতিতে ১১ থেকে ১২ দিন প্রয়োজন হতো।

তিনি বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পর বহির্নোঙরে থাকা মাদার ভেসেল (বড় জাহাজ) থেকে জ্বালানি বহনের জন্য কোনো লাইটারেজের প্রয়োজন হবে না।

তিনি বলেন, কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় ৮৩৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ ও চীনের জিটুজি প্রকল্পের আওতায় ৯০ একরেরও বেশি জমিতে এসপিএম নির্মিত হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘একবার এসপিএম চালু হয়ে গেলে বহির্নোঙর থেকে জ্বালানি ট্যাংকে পেট্রোলিয়াম পণ্যের বহন খরচ কমবে। ফলে বছরে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে, এতেট সময়ও বাঁচবে।

প্রক্রিয়াটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, প্রক্রিয়াটিতে ১.৮০ লাখ কিলোলিটার অপরিশোধিত তেল ধারণক্ষমতার তিনটি এবং ১.০৮ লাখ কিলোলিটার পরিশোধিত তেল ধারণক্ষমতার তিনটি ট্যাংক ব্যবহার করা হবে।

কর্মকর্তারা জানান, ইতোমধ্যে স্থল থেকে গভীর সমুদ্র পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইন স্থাপন করা হয়েছে, যাতে সরাসরি আমদানি করা পেট্রোলিয়াম তেল এসপিএম-এ আনলোড করা যায়।

তিনি বলেন, ‘বর্তমান অবকাঠামো ব্যবহার করে লাইটারেজ অপারেশনের মাধ্যমে পেট্রোলিয়াম তেল অফলোড করা অসম্ভব এবং প্রক্রিয়াটি খুব সময়সাপেক্ষ, ব্যয়বহুল ও ঝুঁকিপূর্ণ।’

এসপিএম প্রতি বছর ৯ মিলিয়ন মেট্রিক টন তেল আনলোড করার ক্ষমতা রাখে।

অপরিশোধিত তেল পরিশোধনের জন্য এসপিএম প্রকল্প থেকে ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ইএফএল) পর্যন্ত একটি ১২০ কিলোমিটার পাইপলাইনও তৈরি করা হয়েছে।

এসপিএম-এর ৪৫ হাজার মেট্রিক টন অপরিশোধিত তেল সংরক্ষণের ক্ষমতা রয়েছে।

প্রকল্পের কাজের অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে প্রায় ১৩৫ কিলোমিটার (কিমি) অফশোর পাইপলাইন এবং ৫৮ কিমি অনশোর পাইপলাইন স্থাপন করা হয়েছে।

প্রকল্পস্থল পরিদর্শনকালে প্রতিবেদক দেখতে পান যে এসপিএম প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ হয়ে  এসেছে। ইতোমধ্যে ছয়টি স্টোরেজ ট্যাংক স্থাপন করা হয়েছে।

ছয়টির মধ্যে  প্রতিটি ৬০ হাজার কিলোলিটার ধারণক্ষমতা-সম্পন্ন তিনটি ট্যাংক অপরিশোধিত তেল সংরক্ষণ করবে এবং বাকি প্রতিটি ৩৬ হাজার কিলোলিটার ধারণক্ষমতা-সম্পন্ন তিনটি ট্যাংক ডিজেল সংরক্ষণ করবে।

নেদারল্যান্ডস-ভিত্তিক ব্লু ওয়াটার এসপিএম ‘বয়া’ নির্মাণ সম্পন্ন করেছে যা প্রকল্পস্থলে শিপমেন্টের অপেক্ষায় রয়েছে।

চায়না পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড বর্তমানে দেশের প্রথম এসপিএম সিস্টেম তৈরি করছে।

বিপিসি বর্তমানে বড় মাদার ভেসেল থেকে তার উপকূলীয় ট্যাংকগুলোতে পেট্রোলিয়াম বহনের জন্য প্রধানত বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের মালিকানাধীন লাইটারেজ বা ছোট জাহাজকে টন প্রতি  ৫ ডলার ৫০ সেন্ট দিয়ে থাকে। এসপিএম প্রকল্পটি বিপিসির এ খরচ বাঁচাবে।

বাংলাদেশ বছরে প্রায় ৬ লাখ টন অপরিশোধিত এবং ১৩ লাখ টন পরিশোধিত তেল আমদানি করে। বাকিগুলো হলো অপরিশোধিত তেল এবং পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম পণ্য।   সূত্র: বাসস

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০