নিজস্ব প্রতিবেদক: টেকসই নগরায়ণ এবং বিকেন্দ্রীকরণ নিশ্চিতে সুশাসন, পরিকল্পনার যথাযথ বাস্তবায়ন ও রাজনৈতিক সদিচ্ছার বিকল্প নেই বলে মনে করে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। গতকাল শনিবার ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘ঢাকার বিকেন্দ্রীকরণ এবং বাংলাদেশের টেকসই নগরায়ণ’ শীর্ষক সেমিনারে সংস্থাটির সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার এ মন্তব্য করেন।
সেমিনারে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী প্রধান অতিথি ছিলেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়– পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ।
সামীর সাত্তার বলেন, টেকসই নগরায়ণ এবং বিকেন্দ্রীকরণ নিশ্চিত করতে সুশাসন, পরিকল্পনার যথাযথ বাস্তবায়ন ও রাজনৈতিক সদিচ্ছার বিকল্প নেই। সুশাসন, পরিকল্পনার যথাযথ বাস্তবায়ন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা, প্রান্তিক পর্যায়ে অবকাঠামো উন্নয়ন, পর্যাপ্ত গণপরিবহন ব্যবস্থা এবং টেকসই অবকাঠামো উন্নয়ন ঢাকা শহরের বিকেন্দ্রীকরণ এবং বাংলাদেশের টেকসই নগরায়ণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে সামীর সাত্তার বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে নগরায়ণ এমনভাবে গড়ে উঠেছে যেখানে আমাদের জিডিপির ৬৫ শতাংশ আসছে শহরাঞ্চল থেকে। ঢাকাকেন্দ্রিক নগরায়ণের জন্য আমরা যেভাবে যানজট, পানিদূষণ, বায়–দূষণ প্রভৃতি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছি, সেই সঙ্গে আমাদের কর্মঘণ্টা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি বাড়ছে জ্বালানি খরচ ও স্বাস্থ্যঝুঁকি। এ অবস্থায় ঢাকার বিকেন্দ্রীকরণের কোনো বিকল্প নেই। পাশাপাশি ঢাকার নগরবাসীর জীবনমান উন্নয়নের জন্য সুচিন্তিত কর্মপরিকল্পনা নীতি গ্রহণ করা সময়ের দাবি।
দেশের প্রতিটি শহরে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে প্রয়োজনীয় আইনগত, প্রশাসনিক, অবকাঠামো ও আর্থিক সক্ষমতা বাড়ানো, পরিকল্পিত স্যাটেলাইট শহরের বিকাশ, ঢাকার বাইরে বসবাসকারীদের জন্য ট্যাক্স হলিডে, সুলভ মূল্যে ইউটিলিটি পরিসেবার পাশাপাশি আর্থিক প্রণোদনা দেয়ার আহ্বান জানান ব্যারিস্টার সামির সাত্তার।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সহ-সভাপতি এবং ভিত্তি স্থপতি বৃন্দের ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্থপতি ইকবাল হাবিব। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ৩৩ শতাংশ লোক নগরে বাস করেন এবং ঢাকা মহানগরীতে প্রতি বছর নতুন করে ৫ লাখ লোক যোগ হচ্ছে। অপরিকল্পিত নগরায়ণের জন্য আমরা প্রতিনিয়ত গৃহহীন জনসংখ্যা বৃদ্ধি, বর্জ্য বৃদ্ধি, পানি ও বায়–দূষণ, বৃক্ষ নিধন ও তাপমাত্রা বৃদ্ধি, জলাবদ্ধতা, যানজট ও স্বাস্থ্য সংকটের শিকার হচ্ছি।
তিনি বলেন, রাজধানীতে বিদ্যমান সবুজের পরিমাণ মাত্র ৮ শতাংশ, যা প্রতিনিয়ত হ্রাস পাচ্ছে, সবুজ সুরক্ষায় আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। তিনি ঢাকার বিকেন্দ্রীকরণের ক্ষেত্রে পরিকল্পিত নগরায়ণ, শহরের বিকেন্দ্রীকরণ ও গ্রামীণ জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ওপর গুরুত্ব দেন।