শেয়ার বিজ ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কর হ্রাস বিল অবশেষে সিনেটে পাস হয়েছে। শুক্রবার মার্কিন সিনেটে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতাদের তুমুল বিতর্কের পর ৫১-৪৯ ভোটে পাস হয় বিলটি। এখন বিলটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সইয়ের মাধ্যমে আইনে পরিণত হবে। খবর বিবিসি, গার্ডিয়ান।
এদিকে বিল পাসের অধিবেশনকে কেন্দ্র করে সিনেটের বাইরে রাস্তায় ব্যাপক বিক্ষোভ প্রদর্শন করে ট্রাম্পবিরোধীরা। বিল পাসের পর শনিবার সকালে ট্রাম্প বলেন, গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে। আর বিরোধী ডেমোক্র্যাটরা দেখছেন, বিত্তবান ও ধনী ব্যবসায়ীদের লাভবান হিসেবে।
উল্লেখ্য, ১৯৮০ সালের পর যুক্তরাষ্ট্রের কর কমানোর এটাই সবচেয়ে বড় বিল। ফলে যুক্তরাষ্ট্র প্রায় এক ট্রিলিয়ন ডলার বা ৭৪২ বিলিয়ন পাউন্ড রাজস্ব হারবে, যা তাদের ঘাটতি বাজেটে যোগ হবে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর যুক্তরাষ্ট্রের ধনী ব্যবসায়ীদের করপোরেট ট্যাক্স ৩৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে নামিয়ে আনার ঘোষণা দেন। এর পর কয়েক দফায় কর কমানোর জন্য সিনেটে বিল উত্থাপন করা হয়। কিন্ত বারবারই তাতে বাধাপ্রাপ্ত হয়। সর্বশেষ শুক্রবার এ বিলটি পাস হয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ‘এটিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাজনৈতিক ‘বড় বিজয়’ হিসেবে দেখছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স সিনেটে সভাপতিত্ব করেন। বিলটিতে বিত্তবানরা লাভবান হবেন বলে রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা বব করকার বিলটির বিরোধিতা করেন। যদিও কয়েকজন রিপাবলিকান বিল পাসের ওই রাতটিকে ‘দেশটির জন্য মহান দিন’ হিসেবে উল্লেখ করেন। ধারণা করা হচ্ছে আগামী অর্থবছর থেকে বিলটি কার্যকর করা হবে। শনিবার সকালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিউইয়র্কের উদ্দেশে হোয়াইট হাউজ ত্যাগ করার আগে সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত রাতটা ছিল আমাদের জন্য অসাধারণ’। আমরাই দেশে সবচেয়ে বড় ট্যাক্স কাট বিল পাস করেছি। তিনি বলেন, মার্কিন নাগরিকরা এখন খুব বেশি খুশি।
হোয়াইট হাউজ স্পিকার পল রায়ান বলেন, ১৯৮৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত এ প্রথমবারের মতো হোয়াইট হাউজ ও সিনেট উভয় ট্যাক্স কাট বিল পাস হয়েছে। এখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অনুমোদনের অপেক্ষায়।
এর আগে ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে চারজন রিপাবলিকান বিলের বিরোধিতায় যোগ দেয়। ফলে বেশ কয়েকবার সিনেটে বিল উত্থাপন করেও তা পাস করতে পারেনি রিপাবলিকান প্রশাসন।
যদিও ট্রাম্প প্রশাসন বলে আসছেন করপোরেট কর কমালে আগামী ১০ বছরে এক দশমিক চার ট্রিলিয়ন ডলার থেকে ২০ ট্রিলিয়ন ডলার রাজস্ব আদায় বাড়বে। কারণ তখন সবাই কর প্রদান করবে। অন্যদিকে বিরোধী ডেমোক্র্যাটদের দাবি কর হ্রাসের ফলে বিত্তবানরা আরও বিত্তবান হবেন। সাধারণ নাগরিকদের কোনো উপকার হবে না। বরং সরকার মোটা অঙ্কের রাজস্ব হারাবে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণের পর ট্রাম্প কর সংস্কার, ওবামা কেয়ার বাতিলসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেন। যেখানে আইনপ্রণেতাদের বেশ সমালোচিত হন। ট্রাম্পের উদ্ধত অচরণে বেশ কয়েকজন আইনপ্রণেতা, উপদেষ্টা পদত্যাগও করেন।