শেয়ার বিজ ডেস্ক : ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জয়ী করতে যুক্তরাষ্ট্রের ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়া হস্তক্ষেপ করেছে বলে মনে করছে দেশটির গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। নাম প্রকাশ না করা শর্তে সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন কয়েকজন মার্কিন কর্মকর্তা। খবর ওয়াশিংটন পোস্ট।
কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হিলারি ক্লিনটনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণা শিবিরের চেয়ারম্যানসহ ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কমিটি ও অন্যদের হাজার হাজার ই-মেইল হ্যাক করে যারা উইকিলিকসকে দিয়েছিলেন, রুশ সরকারের সঙ্গে সম্পর্কিত ওইসব ব্যক্তিদের শনাক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। নির্বাচনে হিলারির জয়ের সম্ভাবনা হ্রাস করা এবং ট্রাম্পের জয়ের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলার জন্য এক অভিযানে নেমেছিল রাশিয়া এবং শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিরা।
জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সর্বসম্মত মূল্যায়ন অনুযায়ী, রাশিয়ার উদ্দেশ্য ছিল এক প্রার্থীর বিপরীতে অন্য প্রার্থীকে সহায়তা করা, ট্রাম্পকে নির্বাচিত করা।’
গত সপ্তায় এক বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটরদের সামনে বিষয়টি উপস্থাপন করে সিআইএ (সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি)। ওই কর্মকর্তারাও তখনই বিষয়টির সম্পর্কে অবহিত হন। সিআইএ-র মূল্যায়ন প্রতিবেদনটি গোপনীয় ছিল। সিআইএ’র কর্মকর্তারা সিনেটরদের জানিয়েছেন, ট্রাম্পকে নির্বাচিত করা রাশিয়ার উদ্দেশ্য ছিল এটা এখন পরিষ্কার। এ বিষয়ে বিভিন্ন উৎস থেকে সাক্ষ্য পেয়েছে সিআইএ।
যুক্তরাষ্ট্রের ১৭টি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের সারাংশ নিয়ে সিআইএ ওই মূল্যায়নটি প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা বলেছেন, কিছু প্রশ্নের উত্তর না থাকায় মূল্যায়নটি নিয়ে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের মধ্যে মৃদু দ্বিমত রয়ে গেছে। এ প্রতিবেদন নিয়ে সিআইএর কোনো মন্তব্য নেই।
গত শুক্রবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ট্রাম্পের ট্রানজিশন টিম জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে বিদেশিদের হস্তক্ষেপের কথা বিশ্বাস করেন না ট্রাম্প।
ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে সাইবার হামলা চালানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে অক্টোবরে রাশিয়াকে অভিযুক্ত করেছিল যুক্তরাষ্ট্র সরকার।
এসব হামলার ফলাফল সম্পর্কে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিন পুতিনকে সতর্ক করেছেন বলেও জানিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপের সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাশিয়া।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে হ্যাক করা ই-মেইলগুলো প্রকাশ করেছিল উইকিলিকস। নির্বাচনের প্রচারণাকালে হিলারির প্রচারণা শিবিরকে এসব ই-মেইলের কারণে বারবার বিব্রত হতে হয়েছিল। টাইম ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এসব তথ্যকে অস্বীকার করেন। ট্রাম্পের মধ্যবর্তী দল (ট্রানজিশন?) বলছে, ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের কাছে গণবিধ্বংসী অস্ত্র রয়েছে এমন তথ্য যারা দিয়েছিল, তারাই এসব তথ্য দিচ্ছে। নির্বাচন অনেক দিন আগেই শেষ হয়েছে। এটি ছিল ঐতিহাসিক নির্বাচন। এখন সামনের দিকে এগোনোর সময়। যুক্তরাষ্ট্রকে আবার সেরা করে তোলার সময়।