শেয়ার বিজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সূচকের পতন দিয়ে শেষ হয়েছে। দিনের শুরুতে ৩০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ড বিক্রির নিলামে দুর্বল চাহিদা থাকায় এদিন দেশটির পুঁজিবাজারে ব্যাপক পতন হয়েছে। যদিও ওয়াল স্ট্রিটে করপোরেট জায়ান্ট ডিজনি এবং পেপসিকো থেকে প্রচুর অর্থ আয় করেছে। খবর: রয়টার্স।
এদিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বন্ড অকশনে ‘৩০ বছর মেয়াদি বন্ড বিক্রির চাহিদা কম থাকা সত্ত্বেও ২১ বিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয়েছে। যদিও ৯৬ বিলিয়ন ডলারের কুপন বিক্রি হয়েছে। এ বিষয়ে সল্টলেক সিটির অ্যালবিয়ন ফ্যাইন্যান্সিয়াল গ্রুপের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা জেসন ওয়্যার বলেছেন, স্টক মার্কেট দিনের শুরুতে উত্থানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে, কিন্তু ট্রেজারি বন্ডের বিক্রিতে চাহিদা কমে যাওয়ায় দিনের শেষে বাজারের পতন হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বিনিয়োগকারীরা এখনও কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেড কর্মকর্তাদের সাম্প্রতিক মন্তব্য নিয়ে ভাবছেন। ফলে তারা বুঝেশুনে বিনিয়োগ করছেন।
সম্প্রতি ফেড কয়েক দফা সুদহার বাড়িয়েছে, যা পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এ অবস্থায় ওয়াল স্ট্রিটে ব্যাপক পতন দেখা গেছে।
এদিকে ট্রেজারি বন্ডের চাপে বৃহস্পতিবার ওয়াল স্ট্রিটে দ্য ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ সূচক ২৪৯.১৩ পয়েন্টস বা শূন্য দশমিক ৭৩ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ৩৩,৬৯৯.৮৮ পয়েন্ট নেমে গেছে। অন্যদিকে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ৩৬.৩৬ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৮৮ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ৪০৮১.৫ পয়েন্টে নেমে গেছে এবং নাসডাককমপজিট ১২০.৯৪ পয়েন্ট বা ১.০২ শতাংশ কমে ১১,৭৮৯.৫৮-এ নেমেছে। এছাড়া এদিন যুক্তরাষ্ট্রের মোট বিনিয়োগ ভলিয়্যুম ছিল ১১.৪৯ বিলিয়ন শেয়ার, যেখানে গত ২০ দিনের ট্রেডিং গড় ছিল ১১.৯৩ বিলিয়ন শেয়ার।
এদিকে ওয়াল স্ট্রিট্রে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ এবং নাসডাক সূচকে অ্যালফাবেট ইনকরপোরেশন আগের সেশন থেকেও ৪.৭ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, যেখানে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচকের ১১ খাতের সব খাতেই সূচক হ্রাস পেয়েছে। অন্যদিকে ডিজনে করপোরেশন গত সপ্তাহে কর্মসংস্থান হ্রাসের ঘোষণার পরও মুনাফা করেছে। এছাড়া সেলফোর্স ইনকরপোরেশনের শেয়ার ২.৩৮ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া পেপসিকো করপোরেশনের বার্ষিক শক্তিশালী মুনাফা প্রবৃদ্ধির পরিকল্পনা ঘোষণার পর তাদের শেয়ার ০.৯৫ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া ড্রাগমেকার অ্যাবভাই ২.৮২ শতাংশ এবং টেপেস্টি ইনকরপোরেশনের শেয়ার ৩.৪৭ শতাংশ বেড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে তদন্তের মুখে ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ ক্র্যাকেন: এদিকে অনিবন্ধিত বিক্রির অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের’ তদন্তের মুখে পড়েছে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ ক্র্যাকেন। এর তদন্ত কার্যক্রম অনেক দূর এগিয়ে গেছে বলে উঠে এসেছে ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে। আগামী সপ্তাহগুলোয় স্যান ফ্রান্সিসকোভিত্তিক ক্রিপ্টো প্ল্যাটফর্মটির সঙ্গে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে পারে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। ওই প্রতিবেদন সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি ক্র্যাকেন। আর এসইসির মন্তব্য জানতে চাইলে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো জবাবও মেলেনি।
এর আগে এসইসি’র চেয়ারপার্সন গ্যারি গেনসলার বলেন, যেসব কোম্পানি ক্রিপ্টো বাজারে আর্থিক লেনদেনে সহায়তা প্রদান করে, বাজারের অন্যান্য মধ্যস্থতাকারীর মতো তাদেরও অবশ্যই এসইসি’র কাছে নিবন্ধন নিতে হবে।
সেপ্টেম্বরে ক্র্যাকেনের প্রধান নির্বাহী বলেছেন, বাজার মধ্যস্থতাকারী হিসেবে এসইসি’র কাছে নিবন্ধন বা ক্রিপ্টো টোকেন বাদ দিয়ে নিয়ন্ত্রকদের আখ্যা দেয়া ‘সিকিউরিটিস’ নামের লেবেল নেয়ার বিষয়ে তাদের কোনো পরিকল্পনা নেই।
নভেম্বরে ইরানে লেনদেন-সংশ্লিষ্ট এক অভিযোগ নিষ্পত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের ‘অফিস অব ফরেন কন্ট্রোল’কে তিন লাখ ৬২ হাজার ডলার জরিমানার পাশাপাশি কিছু নিষেধাজ্ঞা মেনে চলতে বাড়তি এক লাখ ডলার বিনিয়োগে রাজী হয়েছিল ক্র্যাকেন।
