নিজস্ব প্রতিবেদক: মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারকে টাকা ছাপিয়ে ঋণ দেয়া পুরোপুরি বন্ধ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাই সরকার চাহিদা মেটাতে উচ্চ সুদে ট্রেজারি বিল-বন্ডের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ধার করছে। সরকারের উচ্চ সুদের ধারের প্রভাব পড়েছে ব্যাংকঋণের সুদে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে ট্রেজারি বিলের গড় সুদহার বেড়ে ৮ দশমিক ৬৮ শতাংশে উঠেছে। এর সঙ্গে ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ যোগ করে ফেব্রুয়ারিতে ব্যাংকগুলো ঋণ দেবে। ফলে চলতি মাসে গ্রাহক ঋণ নিলে সুদ গুনতে হবে ১২ দশমিক ৪৩ শতাংশ হারে। আগের মাসে যা ছিল ১১ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
এখন ঋণের সুদহার নির্ধারিত হচ্ছে ‘এসএমএআরটি’ বা ‘স্মার্ট’ তথা সিক্স মান্থ মুভিং এভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল। প্রতি মাসের শুরুতে এই হার জানিয়ে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। স্মার্টের সঙ্গে এখন সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে মার্জিন যোগ করে ঋণ দিতে পারে ব্যাংক।
চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের ছয় মাসের গড় সুদহার (স্মার্ট রেট) ছিল ৭ দশমিক ১০ শতাংশ, আগস্টে ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং সেপ্টেম্বরে বেড়ে হয় ৭ দশমিক ২০ শতাংশ, অক্টোবরে ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ, নভেম্বরে ৭ দশমিক ৭২ শতাংশ, ডিসেম্বরে ৮ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং সবশেষ জানুয়ারিতে স্মার্ট রেট বেড়ে দাঁড়ায় ৮ দশমিক ৬৮ শতাংশে।
নীতিমালা অনুযায়ী, প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানি ও কৃষি ও পল্লিঋণের ‘স্মার্ট’ হারের সঙ্গে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে মার্জিন যোগ হবে। অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি মাসে প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানি ঋণ এবং কৃষি ও পল্লিঋণের সর্বোচ্চ সুদহার হবে ১১ দশমিক ৪৩ শতাংশ; যা জানুয়ারিতে ছিল ১০ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
তবে ফেব্রুয়ারিতে ব্যক্তিগত ও গাড়ি কেনার ঋণে ব্যাংক সুদ নিতে পারবে ১৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ। কারণ সিএমএসএমই, ব্যক্তিগত ও গাড়ি কেনার ঋণে অতিরিক্ত ১ শতাংশ তদারকি বা সুপারভিশন চার্জ নেয়ার সুযোগ রয়েছে; যা জানুয়ারিতে ছিল ১২ দশমিক ৮৯ শতাংশ। সাধারণত ব্যাংক থেকে ব্যক্তিগত ও ভোগ্যপণ্য যেমন গাড়ি কেনার ঋণ, আবাসন ঋণ, শিক্ষা ঋণসহ ফ্রিজ, টিভি, কম্পিউটার প্রভৃতি কেনার জন্য যে ঋণ নেয়া হয় এগুলোকে ভোক্তা ঋণ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৯ জানুয়ারি ৯১ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদহার ছিল ১১ দশমিক ৩৫ শতাংশ। ১৮২ দিন মেয়াদি বিলের সুদহার ছিল ১১ দশমিক ৪০ শতাংশ। আর ৩৬৪ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদহার ছিল ১১ দশমিক ৬০ শতাংশ।