Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 9:25 pm

ঠাকুরগাঁওয়ে কালো কচুতেই হাসি ফুটছে কৃষকের মুখে

শামসুল আলম, ঠাকুরগাঁও: অল্প পরিশ্রম করে অধিক লাভবান হওয়া যায়Ñএমন একটি ফসল কালো কচু। এই কালো কচু চাষ করেই লাভবান হচ্ছেন ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলের প্রান্তিক চাষিরা। বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতের কচুর চাষ হলেও খাবার উপযোগী এই কালো জাতের কচুতে মুখে হাসি ফুটেছে চাষিদের। উঁচু জমিতে অল্প পরিশ্রমে এর অধিক ফলন পাওয়া যায় বলে জানিয়েছেন তারা। এছাড়া বাজারে ভালো দামে বিক্রি করা যায় বলে কচু চাষে আগ্রহ বাড়ছে বলে এই অঞ্চলের কৃষকরা জানিয়েছেন।

সম্প্রতি সরেজমিন গিয়ে উপজেলার নন্দুয়ার ইউনিয়নের কালো কচু চাষ করেছেন এমন এক চাষি আমিরুল হোসেন মিলন জানান, এটি এমন একটি ফসল, যা থেকে অল্প সময়ে অধিক লাভবান হওয়া যায়। তেমন খরচ এবং পরিশ্রম ছাড়াই দু’একটা নিড়ানী এবং জৈবসার দিয়ে উৎপাদনে লাভ বেশি হয়।

তিনি জানান, এ কচু চাষে বিঘাপ্রতি খরচ হয় প্রায় ১৫-২০ হাজার টাকা। তাই তিনি প্রতি বছর তার বাড়ির পাশে এই কচুর চাষ করেন। তিনি আরও বলেন, এবার তিনি ৩৩ শতাংশ জমিতে এই কচু চাষ করেছেন। কিছুদিন আগে এ জমির অর্ধেক কচু তুলে প্রতি কেজি ৩৯ টাকা দরে বাজারে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেছেন। আর জমির বাকি কচু আরও ভালো দামে বিক্রি এবং ওই জমি থেকে ৬০-৬৫ হাজার টাকা আয় হবে বলে তিনি আশাবাদী।

মিলনের মতো উপজেলার বেশ কয়েকজন কৃষকও কালো জাতের এই কচু চাষ করছেন বলে জানা গেছে। তারা সবাই এ ফসলের চাষ করে বেশ লাভের মুখ দেখছেন বলে জানিয়েছেন।

একই ইউনিয়নের বাসিন্দা কচু চাষি মো. দুলাল বলেন, জমিতে কচুর বীজ রোপণের কয়েক মাসের মধ্যেই নতুন কচু বাজারে বিক্রি করা যায়। এই সবজি চাষে কৃষকের উৎপাদন খরচও কম লাগে। তিনি বলেন, ‘আমি এবার কয়েক শতক জমিতে সাদা কচু চাষ করেছি।’ আগামীতে তিনিসহ বেশ কয়েকজন চাষি এই কচু চাষে ঝুঁকে পড়বেন বলে তিনি আশাবাদী।

রানীশংকৈল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সঞ্জয় বেদনাথ জানান, কচু শাক একটি বিষমুক্ত সবজি। কচুর শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বি, সি, ক্যালসিয়াম ও লৌহ আছে। ভিটামিন ‘এ’ ছোট-বড় সবার রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে। আর ভিটামিন ‘সি’ শরীরের যে কোনো ক্ষত সারাতে সাহায্য করে। তাই কচুচাষিদের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানাই। এছাড়া উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলে জানান তিনি।