Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 2:29 pm

ঠাকুরগাঁওয়ে খেজুরের গুড় তৈরিতে ব্যস্ত গাছিরা

শামসুল আলম, ঠাকুরগাঁও: চারদিকে শীতে আগমনী বার্তা। আর এ মৌসুমের অত্যন্ত জনপ্রিয় উপকরণ খেজুরের গুড়। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানের ন্যায় ঠাকুরগাঁয়েও এখন খেজুরের রস সংগ্রহ করতে ও গুড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নারগুন ইউনিয়নসহ বিভিন্ন স্থানে এ কাজে ব্যস্ততা লক্ষ্য করা গেছে।

জানা গেছে, আসন্ন শীত মৌসুম সামনে রেখে জেলায় খেজুরের রস থেকে গুড় তৈরি করতে রাজশাহীর থেকে এসেছেন অনেকে। এছাড়া প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে গুড় উৎপাদন ও বিপণনের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন স্থানীয় অনেকেই। গাছ তোলার পর এখন রস সংগ্রহের পরিমাণও বাড়ছে। আর গাছিদের উৎপাদিত গুড় ব্যবসায়ীদের হাত ঘুরে পরিবহনের মাধ্যমে ঠাকুরগাঁও থেকে দেশের নানা প্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে।

আবহমান গ্রামবাংলায় ঐতিহ্য, শীতের সকালে সূর্য মিটমিট করে আলো ছড়ানোর আগেই গাছিরা বেরিয়ে পড়ছেন খেজুরের রস সংগ্রহে। এরপর সংগৃহীত রস জ্বাল দিয়ে শুরু হয় গুড় তৈরির প্রক্রিয়া। এরপর সুস্বাদু পাটালি ও লালি গুড় বিক্রি করে চাঙ্গা হয় গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা। শীতের এ মৌসুমে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে গুড় উৎপাদন ও বিপণনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন জেলার অনেক মানুষ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঋতুর পালাবদলে ঠাকুরগাঁওয়ের শিবগঞ্জ, পীরগঞ্জ ও সদর উপজেলায় এমন দৃশ্য এখন নিত্যদিনের ঘটনা। ভালো দাম পেতে গাছিরাও রস থেকে ভালো মানের গুড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

তবে এসব গুড় তৈরি করতে অনেক সময় ক্ষতিকর পন্থার আশ্রয় নিচ্ছেন বলেও জানা গেছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ফিটকিরি আর চিনি মেশালে গুড় দেখতে ভালো হয়। এতে দামও ভালো পাওয়া যায়। কারণ এতে গুড়ের তৈরি পাটালির রংটা চকচকে হয়। তা না হলে দামটা কম হয় বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। এ ধরনের তথ্য জানান জেলার সুজন, সাইফুর, মজিদ ও রবিউল হোসেনসহ অনেকে। তবে এতে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির কথা বললে জবাব মেলেনি তাদের নিকট থেকে।

গাছিরা জানিয়েছেন, হাটের দিন স্থানীয় মোকামে লালি গুড় পাইকারি ৭০ থেকে ৭৫ টাকা এবং ডিকা গুড় ৯০-৯৫ টাকা দরে বিক্রি করেন গাছিরা। এরপর ব্যবসায়ীদের হাত ঘুরে বিভিন্ন হাটে বাজারের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলে যায় উৎপাদিত এসব গুড় ও পাটালি।

সরেজমিনে সদর উপজেলার নারগুন ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, সেখানকার ভবলা ইক্ষু ফার্মে প্রায় ৫০০ খেজুর গাছ রয়েছে। সেখান থেকে খেজুরের সংগ্রহের কাজও শুরু হয়েছে। তবে গত বছর খেজুরের রসে নিপাহ ভাইরাসের উপস্থিতির কারণে ঠাকুরগাঁয়ে কয়েকজনের মৃত্যু হয়। সেজন্য এ বছর রস পানে বাড়তি সাবধানতা অবলম্বনের কথা বলেছেন সংশ্লিষ্টরা।