শামসুল আলম, ঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁওয়ে মাঘের শুরুতে শীত জেঁেক বসেছে। অনবরত বাড়ছে শীতের তীব্রতা ও কুয়াশা। এতে বিপাকে পড়েছে জনজীবন। দেশের উত্তরাঞ্চল এবং হিমালয়ের অদূরে হওয়ায় ঠাকুরগাঁও জেলায় প্রতি বছরই আগেভাগেই চলে আসছে শীত। এবার সেই ধারা লক্ষ্য করা গেছে। গত কয়েকদিন ধরে দিনে হালকা গরম থাকলেও সন্ধ্যার শুরু হচ্ছে তীব্র শীত। রাতভর পড়ছে কুয়াশা।
গত ১৫ জানুয়ারি বাংলা বর্ষপঞ্জিতে ছিল মাঘ মাসের প্রথম দিন। পৌষের শেষ কয়েকদিনের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে মাঘের শুরুতেও। আকাশ কুয়াশার দখলে থাকায় দিনের বেশিরভাগ সময় সূর্য থেকে যাচ্ছে আড়ালে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, উত্তরের হিমেল হাওয়ায় এবার গত কয়েক বছরের তুলনায় বেশি শীত অনুভ‚ত হচ্ছে।
জেলা শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একদিকে শীত বাড়ছে, অন্যদিকে করোনাভাইরাস নিয়ে চিন্তিত সাধারণ মানুষ। ইতোমধ্যে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকাতে ঠাকুরগাঁওয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। জেলা প্রশাসনসহ সামাজিক, রাজনৈতিক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ নানা ব্যানারে এসব সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। ঠাকুরগাঁওয়ে শীতের প্রকোপ বাড়ায় লেপ-তোশক তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন স্থানীয় কারিগররা।
এদিকে শীত ও কুয়াশার কারণে কাজ করতে অসুবিধা হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন জেলার নিম্নননননননননন আয়ের মানুষ, শিশু ও বৃদ্ধরা। সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নের দিনমজুর এনামুল হক বলেন, ‘ঠাণ্ডায় কীভাবে যে খেয়েপরে বাঁচব? সকালে ঠাণ্ডার কারণে কাজে যেতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।’
জানা গেছে, তীব্র শীতে জড়োসড়ো হয়ে গেছে গবাদি পশুপাখিও। কেউ কেউ আবার খড়-কুটোতে আগুন জ্বালিয়ে করছেন শীত নিবারণের চেষ্টা। কুয়াশার কারণে সড়কে-মহাসড়কে বাস-ট্রাকগুলো চলাচল করছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। শীতের কাপড় পরে হাঁটাচলা করছেন সবাই। ঠাণ্ডার প্রকোপে হাসপাতালগুলোয় রোগীর ভিড়ও বাড়ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর আশঙ্কা করছে, মাঘে এবার শীতের তীব্রতা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে। এ মাসেই কমপক্ষে দুটি শৈত্যপ্রবাহ দেখা দিতে পারে বলে ধারণা করছেন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। এদিকে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুস্থ ও ছিন্নমূল মানুষের শীত নিবারণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে পাওয়া কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে।