শামসুল আলম, ঠাকুরগাঁও : ঠাকুরগাঁওয়ে গত বছরের তুলনায় এ বছর বেড়েছে সরষের আবাদ। হলুদের সমারোহ আর মৌমাছিদের কলতানে বর্তমানে সুগন্ধিময় সরষের ক্ষেত। জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সরষের ক্ষেত দেখে যে কারও মন মুদ্ধতায় মেতে উঠবে। কৃষি বিভাগের সূত্রমতে, গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি জমিতে এ বছর সরষের আবাদ হয়েছে। আর ফলনও ভালো হবে বলে জানায় কৃষি বিভাগ। আর কিছুদিনের মধ্যেই সরষে ক্ষেত থেকে তুলে মাড়াই শুরু করবেন কৃষকেরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাসেল ইসলাম জানান, এ বছর সরষে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১৬ হাজার ৬৯০ হেক্টর জমিতে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৫ হাজার ৩৫ মেট্রিক টন। এ পর্যন্ত চলমান আবাদের মধ্যে ১৫ হাজার ৬২৩ হেক্টর জমিতে সরষের আবাদ হয়েছে, যেক্ষেত্রে গত বছর আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২ হাজার ৬৩৫ হেক্টর জমিতে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৯ হাজার ৭১১ মেট্রিক টন। আবাদ হয়েছিল ১৩ হাজার ৩৭৪ হেক্টর জমিতে।
সদর উপজেলার ভেলাজান গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ খাদেমুল হোসেন জানান, গত বছর তিনি ৫০ শতাংশ জমিতে সরষে করেছিলেন। দামও পেয়েছিলেন ভালো। তাই এবার বাড়িয়ে এক বিঘা জমিতে সরষের আবাদ করেছেন।
সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের কৃষক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, গত বছর ২৫ শতাংশ জমিতে সরষের আবাদ করেছিলেন, দামও পেয়েছিলেন ভালো। এবছরও তিনি চাষ বাড়িয়ে প্রায় দেড় বিঘা (৭৫ শতক) জমিতে সরষের আবাদ করেছেন। এর মধ্যে সরষে ছোট থাকতেই শাক হিসেবে বিক্রি করেছেন। সরষের ফলনও ভালো হবে বলে তিনি প্রত্যাশা করছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. আব্দুল আজিজ জানান, জেলায় এবার সরষের আবাদ বেড়েছে। গত বছর সরষের ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকেরা সরষে লাগিয়েছেন বেশি। এ অঞ্চলের সরষের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন হাট-বাজারে। জেলার সরষে দিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘানির মাধ্যমে খাটি সরষের তেল করা হয়, যার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে দেশব্যাপী। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে এ বছরও ফলন ভালো হবে এবং কৃষকেরা ভালো দাম পাবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।