শামসুল আলম, ঠাকুরগাঁও: ভোজ্যতেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় সরষে চাষে আগ্রহ বেড়েছে ঠাকুরগাঁওয়ে। ফলে এ বছর ঠাকুরগাঁওয়ে বেড়েছে সরষের আবাদ। আবহাওয়া অনুকূল হওয়ায় এ বছর সরষের ভালো ফলন আশা করছেন চাষিরা।
হলুদের সমারোহ আর মৌমাছিদের কলতানে বর্তমানে সুগন্ধিময় সরষের ক্ষেত। জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সরষের ক্ষেত দেখে যে কারও মনমুদ্ধতায় মেতে উঠবে।
জেলা কৃষি বিভাগের সূত্রমতে, গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি জমিতে এ বছর সরষের আবাদ হয়েছে। ফলনও ভালো হবে বলে জানায় কৃষি বিভাগ। আর কয়েকদিনের মধ্যেই সরষে ক্ষেত থেকে তুলে মাড়াই শুরু করবেন কৃষকরা।
এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাসেল ইসলাম জানান, এ বছর সরষে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১২ হাজার ৬৩৫ হেক্টর জমিতে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ১৯ হাজার ৭১১ মেট্রিক টন। তবে আবাদ হয়েছে ১৩ হাজার ৩৭৪ হেক্টর জমিতে, যা গত বছরের চেয়ে বেশি। গত বছর আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২ হাজার ৫০০ হেক্টর। আবাদ হয়েছিল ১২ হাজার ৮২৯ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ১৯ হাজার ২০০ মেট্রিক টন।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নের ভেলাজান গ্রামের কৃষক লক্ষণ চন্দ্র জানান, গত বছর তিনি ৪০ শতাংশ জমিতে সরষে করেছিলেন। দুই হাজার টাকার বেশি মণ ধরে বিক্রি করেছেন। তাই এবার বাড়িয়ে দেড় বিঘা (১০০ শতক) জমিতে সরষের আবাদ করেছেন।
সদর উপজেলার নারগুন ইউনিয়নের সেন্টারহাট এলাকার কৃষক সাইফুর রহমান জানান, গত বছর ৩০ শতাংশ জমিতে সরষের আবাদ করেছিলেন। দামও পেয়েছিলেন ভালো। তিনি জানান, সরষের আবাদে খরচ হয় এবং সরষের আবাদ শেষে ওই জমিতে বোরো বা অন্য আবাদ করা যায়। তাই এ বছরও তিনি বাড়িয়ে প্রায় দুই বিঘা জমিতে সরষের আবাদ করেছেন। এর মধ্যে সরষে ছোট থাকতেই শাক হিসেবে বিক্রি করেছেন। সরষের ফলনও ভালো হবে বলে তিনি প্রত্যাশা করছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আবু হোসেন জানান, জেলায় এবার সরষের আবাদ বেড়েছে। গত বছর সরষের ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকরা সরষে লাগিয়েছেন বেশি। এ অঞ্চলের সরষের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন হাটবাজারে। এ অঞ্চলের সরষে দিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘানির মাধ্যমে খাঁটি সরষের তেল করা হয়; যার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে ফলন ভালো হয়ে কৃষকরা ভালো দাম পাবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।