প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁও : ঠাকুরগাঁওয়ে গত বছরের তুলনায় এ বছর বেড়েছে সরিষার আবাদ। হলুদের সমারোহ আর মৌমাছিদের কলতানে বর্তমানে সুগন্ধিময় সরিষার ক্ষেত। জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সরিষার ক্ষেত দেখে যে কারও মন মুগ্ধতায় মেতে উঠবে। কৃষি বিভাগের সূত্র মতে গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি জমিতে এ বছর সরিষার আবাদ হয়েছে। আর ফলনও ভালো হবে বলে জানায় কৃষি বিভাগ। আর কিছুদিনের মধ্যেই সরিষাক্ষেত থেকে তুলে মাড়াই শুরু করবেন কৃষকেরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, চলতি বছর ১৯ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে, যা গত বছরে আবাদ হয়েছিল ১৫ হাজার ৯৩০ হেক্টর জমি।
সদর উপজেলার ভেলাজান গ্রামের কৃষক আসলাম হোসেন জানান, গত বছর তিনি ৫০ শতাংশ জমিতে সরিষা করেছিলেন। দামও পেয়েছিলেন ভালো। তাই এবার বাড়িয়ে এক বিঘা (১শ শতক) জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। কারণ সরিষা আবাদে খরচ কম লাভ বেশি। তাছাড়া ধান কাটার পর সরিষা তুলে বোরো অথবা ভুট্টা আবাদ করা যায়।
সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের দাসপাড়া গ্রামের কৃষক রবি চন্দ্র জানান, গত বছর ২৫ শতাংশ জমিতে সরিষার আবাদ করেছিলেন, ভালো ফলন ও দামও পেয়েছিলেন। এ বছরও তিনি বাড়িয়ে প্রায় দেড় বিঘা (৭৫ শতক) জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। এর মধ্যে সরিষা ছোট থাকতেই শাক হিসেবে বিক্রি করেছেন। সরিষার ফলনও ভালো হবে বলে তিনি প্রত্যাশা করছেন। তাছাড়া সরিষা আবাদের পর বোরো ধান রোপণ করব। ইতোমধ্যে সরিষা ক্ষেত ফুলে হলুদের সমারোহ হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, জেলায় এবার সরিষার আবাদ বেড়েছে। গত বছর সরিষার ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকেরা সরিষা লাগিয়েছেন বেশি। এ অঞ্চলের সরিষার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন হাটবাজারে। জেলার সরিষা দিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘানির মাধ্যমে খাঁটি সরিষার তেল করা হয়; যার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে দেশব্যাপী। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে এ বছরও ফলন ভালো হয়ে কৃষকেরা ভালো দাম পাবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।