শামসুল আলম, ঠাকুরগাঁও : শীতের আগমনে পরিবারের সদস্যের শীত মোকাবিলায় লেপ-তোশকের চাহিদা বেড়ে যায় এ সময়টাতে। দিনে কিছুটা গরম থাকলেও রাতে শীত পড়ছে। এভাবেই আসি আসি করছে শীত। শীত মৌসুমে এ অঞ্চলে তুলনামূলক শীতের প্রভাব বেশি থাকে। আর এই শীত মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি হিসেবে ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষের হিড়িক পড়েছে লেপ-তোশক বানাতে।
গত রোববার পৌর শহরের বিভিন্ন স্থানে লেপ-তোশক বানানোর দৃশ্য চোখে পড়ে। এর মধ্যে শহরের গোধূলি বাজার, কালিবাড়ী, টেকনিকাল কলেজ মোড়, বাসস্ট্যান্ড, নরেশ চৌহান সড়ক, ঠাকুরগাঁও রোডসহ বিভিন্ন স্থানে লেপ-তোশক বানাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। দোকানের সামনে বসে একের পর এক লেপ-তোশক বানাচ্ছেন তারা।
শহরের গোধূলি বাজার এলাকার লেপ-তোশকের দোকানদার আব্দুল জলিল জানান, প্রতিদিন তারা লেপ সেলাই করে থাকেন। সাইজ অনুযায়ী প্রতিটি লেপে তারা মুজরি পান দেড়শ থেকে ২শ টাকা। আর সেলাইকর্মীরা সবাই একই নিয়মে মুজরি নিয়ে থাকেন। দিন শেষে ৬শ থেকে ১ হাজার টাকা রোজগার হয় তাদের। তা দিয়েই সংসার চালান তারা।
লেপ বানাতে আসা শহরের গোয়ালপাড়া মহল্লার গৃহিণী সিদ্দিকা বেগম বলেন, দিনে সামান্য গরম থাকলেও রাতে ঘুমানোর সময় অনেক ঠাণ্ডা করছে। বিশেষ করে রাতের শেষ সময়ে প্রচুর ঠাণ্ডা। তাই আগেভাগেই শীতের জন্য লেপ বানাতে আসছি। কারণ শীত যতই বাড়বে এসব দোকানে ভিড় ততই বাড়বে।
পৌর শহরের কালিবাড়ী বাজারের লেপ-তোশক ব্যবসায়ীরা জানান, কিছুটা শীত অনুভূত হলেও এখনও ভালো করে শীত পড়েনি। এর পরেও রাতে শীত করে। তাই লোকজন শীতবস্ত্রের প্রতি ঝুঁকছেন। প্রতিদিন প্রায় ১০-১২টি লেপ-তোশকের অর্ডার আসছে। শীত যতই বাড়বে অর্ডার ততই বাড়তে থাকবে বলে জানান তিনি।
শহরের কালিবাড়ি এলাকার মিন্টু তুলা ঘরের স্বত্বাধিকারী মিন্টু ইসলাম জানান, তুলা ও কাপড়ের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় গত বছরের তুলনায় এ বছর লেপ-তোশক বানাতে খরচ কিছুটা বেশি পড়ছে। শিমুল তুলা প্রতি কেজি ৬৫০ থেকে ৮৫০ টাকা বা এর চেয়ে বেশি, কার্পাস তুলা ১৫০ থেকে আড়াইশ টাকা, গার্মেন্টস তৈরি কালো হুলু কালা পচা তুলা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, সাদা তুলা ৮৫ থেকে ১শ টাকায় কিনতে হচ্ছে বলে জানান তিনি। এছাড়া কাপড়ের গজ মান অনুযায়ী প্রতি গজ ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। সব মিলিয়ে ভালো মানের একটি লেপ বানাতে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫শ টাকার মতো খরচ পরছে। একই মানের একটি তোষকেও খরচ আসে প্রায় আড়াই হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা। এছাড়া কারও ব্যক্তিগত আরও ভালো মানের লেপ-তোশকে খরচ তাদের চাহিদামতো। সব মিলিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন করিগররা।