ঠাকুরগাঁওয়ে ৫২ বছরেও শেষ হয়নি সেতুর কাজ

 

শামসুল আলম, ঠাকুরগাঁও : ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ১১ মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের হরিনারায়ণপুর গ্রামে শুক নদীতে কাজ শুরু হওয়ার পর ৫২ বছরেও শেষ হয়নি সেতুর নির্মাণকাজ। এ নদীতে অসমাপ্ত সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ার কারণে ১০ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষকে প্রতিনিয়ত দৈনন্দিন কাজে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।

স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, ১১ মোহাম্মদপুর ইউনিয়নে হরিনারায়ণপুর গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে শুক নদী। ১৯৭১ সালে নদীতে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। এ সময় সেতুর পিলার তৈরি করা হলে মুক্তিযুদ্ধের কারণে তা থেমে যায়। তার পর থেকে গত ৫২ বছরেও কাজের কোনো অগ্রগতি হয়নি। এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন ১১নং মোহাম্মদপুর, ১০নং জামালপুর, ১৬নং নারগুন, ৮নং রহিমানপুরÑএই চার ইউনিয়নের প্রায় ১০ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ।

স্থানীয়রা জানান, নদীতে সেতু না থাকায় ওই ফসলি জমিগুলোয় আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে চাষাবাদ করতে পারেন না তারা। আবার উৎপাদিত ফসল ঠিকমতো ঘরে তুলতেও হিমশিম খেতে হয়। নদীর পূর্ব পাশে বাজার না থাকায় নদীর পূর্ব পারের হরিনারায়ণপুর গ্রামের লোকজন তাদের উৎপাদিত ফসল ঠিকমতো বাজারে বিক্রি করতে পারছেন না এবং ফসলের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পড়ছেন।

ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মো. সিদ্দিক হোসেন বলেন, নদীতে সেতু না থাকায় আমি সময়মতো কলেজে আসতে পারি না। সারা বছরই নদী পার হয়ে আমাদের স্কুল-কলেজে আসতে হয়। শুষ্ক মৌসুমে স্বল্প পানি পার হয়ে স্কুলে আসতে হয়। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি হলে স্কুলে যাওয়া অসুবিধা হয়ে যায়। অনেক দূরে গিয়ে নদী পার হয়ে স্কুলে আসা বা যাওয়ার সময়  অনেক কষ্ট হয়।’

কৃষক হায়দার আলী, রাজু মিয়া, খলিল হেসেন ও আরিফ হোসেন জানান, নদী সেতু না থাকায় আমাদের কৃষিপণ্য পরিবহন করে আড়তে কেনাবেচা করতে পারছি না। এ ছাড়া অসুস্থ লোকজনকে দ্রুত চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত হতে হচ্ছে।

ঘরিনারায়ণপুর গ্রামের আনছার আলী এক সাবেক আনছার সদস্য জানান, গ্রামে নদীতে সেতু না থাকায় দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে স্থানীয়দের। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের স্কুল-কলেজে যেতে এবং অসুস্থ ব্যক্তিদের জরুরি চিকিৎসায় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। প্রতিনিয়ত নদীতে ভিজে পার হয়ে কাজ করতে হয়। সেতু না থাকায় দুপারের মানুষের কষ্টের শেষ নেই। তারা উৎপাদিত ফসল সময়মতো ঘরে তুলতে পারেন না, আবার উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হন।

এ বিষয়ে ১১ মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. সোহাগ হোসেন জানান, উপজেলা পরিষদে ব্রিজটি নতুন করে স্থাপনের ব্যাপারে জানানা হয়েছে। ব্রিজটি হলে কয়েক গ্রামের হাজার হাজার মানুষ উপকৃত হবেন।

ঠাকুরগাঁও এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মো. আব্দুল কাদের জানান, হরিনারায়ণপুর গ্রামের শুক নদীর এই সেতু নতুন করে নির্মাণের ব্যাপারে তালিকা পাঠানো হয়েছে। অনুমোদিত হলে নির্মাণ কাজ শুরু হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০