গতকালের পর
সিজনাল ফ্লু যেহেতু একটি ভাইরাসবাহিত রোগ, তাই এর লক্ষণ দেখা দিলে বাড়ির বাইরে না যাওয়াই উচিত। বাড়ির অন্য সদস্যদের সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে রোগীর একটু আলাদাভাবে অবস্থান করাই ভালো। অর্থাৎ তাদের থেকেও যতটা সম্ভব পৃথক থাকতে হবে। তাদের সংস্পর্শে যেতে হলে মাস্ক পরিধান করা উচিত। তা ছাড়া একই গ্লাস, থালাবাটি, চামচ প্রভৃতি ব্যবহার না করাই ভালো। করোনার মতো এই ভাইরাসকেও মাস্ক, হাত ধোয়া ও হাঁচি-কাশির আদবকেতা মেনে প্রতিরোধ করা সম্ভব।
চিকিৎসকের পরামর্শ নিন: শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তির ক্ষেত্রে সাধারণ ফ্লুর উপসর্গের পাশাপাশি কখনও কখনও শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। তবে যেকোনো বয়সী রোগীর শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে কিংবা দুই থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে জ্বর উপশম না হলে বা জ্বর বাড়তেই থাকলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া আবশ্যক। কারও কারও হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হতে পারে। এছাড়া আগে থেকেই ফুসফুসের কোনো রোগ থাকলে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম থাকলে কিংবা রোগী বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি হলে শুরুতেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। চিকিৎসক তাকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেবেন। এমন রোগীর শ্বাসকষ্ট হলে, অতিরিক্ত কাশি হলে, সাধারণ লক্ষণগুলোই খুব বেশি ভোগালে, কিংবা খাওয়াদাওয়া করতে না পারলে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা নিতে হবে।
প্রতিরোধে সচেতনতা: হাঁচি-কাশির আদবকেতা বজায় রাখতেই হবে সবাইকে। টিস্যু বা রুমাল দিয়ে ঢেকে নিতে হবে হাঁচি-কাশি। তারপর ব্যবহৃত টিস্যু পেপার ডাস্টবিনে ফেলতে হবে। হাতের কাছে এগুলো না থাকলে কনুই দিয়ে হাঁচি-কাশি ঢেকে নিন।
ফ্লু ও নিউমোনিয়ার টিকা: শীত আসন্ন। তার আগেই এবার বেড়ে গেছে ঠাণ্ডা-জ্বরের প্রকোপ। শীতে ফ্লু ও নিউমোনিয়ার প্রাদুর্ভাব আরও বেশি দেখা দিতে পারে। এ দুটি রোগ ঠেকাতে টিকা আছে। ফ্লু ও নিউমোনিয়ার ঝুঁকিতে যারা রয়েছেন, শীত মৌসুমের আগে তাদের ফ্লু এবং নিউমোনিয়ার টিকা নিয়ে নেয়া উচিত এখনই।
কারা নেবেন: বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা যাদের কম, কিংবা যারা ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি কোনো রোগে ভুগছেন (যেমন অ্যাজমা, সিওপিডি প্রভৃতি), তাদের ফ্লু এবং নিউমোনিয়ায় ভোগার ঝুঁকি বেশি থাকে।
কীভাবে নেবেন: ফ্লুর টিকা নিতে হয় প্রতিবছরই। আর নিউমোনিয়ার টিকা নিতে হয় পাঁচ বছর পরপর। নিকটস্থ টিকাকেন্দ্রে বা হাসপাতালেই দিতে পারবেন। দুটি টিকা একই দিনে নেয়া যাবে। দরকার হলে তার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিন। [শেষ]
ডা. আবদুস শাকুর খান
বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ