আন্তর্জাতিক মিঠাপানির ডলফিন দিবস উদ্যাপিত

ডলফিন সংরক্ষণে সফলতার সঙ্গে কাজ করছে সরকার: পরিবেশমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, ডলফিন সংরক্ষণে বাংলাদেশ সরকার সফলতার সঙ্গে কাজ করছে। সরকারি কার্যক্রমে সফলতার ফলে সুন্দরবনে ডলফিনের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বলেন, সুন্দরবনের ঢাংমারী, ঘাঘরামারী ও চাঁদপাই অভয়ারণ্যে ডলফিনের বৃদ্ধির হার ৫৫ শতাংশ, যা দেশের ডলফিন সংরক্ষণের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক। শুশুক বা গাঙ্গেয় ডলফিন নামে পরিচিত বাংলাদেশের মিঠাপানির ডলফিন নদীর যে অংশে বেশি, সেখানে মাছও বেশি পাওয়া যায়। ডলফিন রক্ষা করা গেলে নদীর প্রতিবেশও সংরক্ষণ করা সম্ভব। তাই দেশের নদীগুলোতে বিদ্যমান মিঠাপানির ডলফিন রক্ষায় সরকার সর্বতোভাবে কাজ করছে।

গতকাল শনিবার ‘আন্তর্জাতিক মিঠাপানির ডলফিন দিবস-২০২০’ উপলক্ষে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বন অধিদপ্তর আয়োজিত ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার, সচিব জিয়াউল হাসান ও অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) ড. মো. বিল্লাল হোসেন। আলোচক ছিলেন আইইউসিএন (ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচার), বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ রাকিবুল আমীন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আজিজ এবং প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু। বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন।

ডলফিন সংরক্ষণে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এ যাবৎ সরকার দেশে ৯টি ডলফিন অভয়ারণ্য ঘোষণা করেছে। ডলফিন অ্যাকশন প্ল্যান এবং দেশের অভ্যন্তরে ডলফিনের বিস্তৃতিবিষয়ক এটলাস প্রস্তুত করা হয়েছে। হালদা নদীতে ডলফিনের সংখ্যা নির্ণয় এবং ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে।

সুন্দরবনের তিনটি ডলফিন অভয়ারণ্যের জন্য কমিউনিটিভিত্তিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে ডলফিন হত্যার জন্য সর্বোচ্চ তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড এবং একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটালে পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডের বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, সুন্দরবনের ডলফিন সংরক্ষণের জন্য স্থানীয় ৭০ সদস্য বিশিষ্ট সাতটি ডলফিন কনজারভেশন দল গঠন করা হয়েছে। তাদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে ডলফিন সংরক্ষণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। সুন্দরবনের ডলফিন অভয়ারণ্যের-সংলগ্ন মৎস্য সম্পদের ওপর নির্ভরশীল এক হাজার জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান এবং বিকল্প আয় বৃদ্ধিমূলক আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। ডলফিন কনজারভেশন দল এবং সংশ্লিষ্ট বনকর্মীদের যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া ডলফিন মেলা আয়োজনসহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজ এবং কমিউনিটিভিত্তিক ডলফিন সম্পর্কিত সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

আলোচকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বনমন্ত্রী বলেন, মিঠাপানির ডলফিনকে মিঠাপানির জাতীয় প্রাণী হিসেবে ঘোষণার বিষয়ে মন্ত্রণালয় আন্তরিকভাবে বিবেচনা করবে। ডলফিন সংরক্ষণে বন অধিদপ্তর, ডব্লিউসিএস বাংলাদেশ ও আইইউসিএনের সমন্বিত কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। দেশের প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে নিবেদিত ব্যক্তিবর্গকে ডলফিন রক্ষার জন্য নিজ নিজ স্থান থেকে একনিষ্ঠভাবে দায়িত্ব পালন করতে আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, নদীর দূষণ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সবার সমন্বিত প্রয়াসেই আমরা ডলফিন সংরক্ষণ কার্যক্রমে সফল হব।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০