নিজস্ব প্রতিবেদক: ডলারের বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে ব্যাংকের পর এবার মানি এক্সচেঞ্জগুলোকে ডলার কেনাবেচায় মুনাফার সীমা বেঁধে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন থেকে মানি এক্সচেঞ্জ যে দামে ডলার কিনবে, তার চেয়ে এক টাকা থেকে সর্বোচ্চ দেড় টাকা বেশি দামে বিক্রি করতে পারবে। ব্যাংক যে দরে নগদ ডলার বিক্রি করবে সেটাই হবে এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর বেঞ্চ মার্ক। ডলারের বাজার স্থিতিশীল করতে মুনাফার এ সীমার কথা মানি এক্সচেঞ্জ অ্যাসোসিয়েশনকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। এর আগে গত ১৪ আগস্ট বৈদেশিক মুদ্রার বাজার স্থিতিশীল করতে ব্যাংকগুলোর জন্য ডলারের ক্রয়-বিক্রয় হারের মধ্যে ১ টাকার ব্যবধান বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
গতকাল মানি এক্সচেঞ্জ অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্ব করেন ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল। এছাড়া বৈঠকে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম শেয়ার বিজকে বলেন, অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) সঙ্গে মিটিং করে একটা সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, ব্যাংকগুলো যে দামে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি বিল আনবে তার থেকে সর্বোচ্চ এক টাকা বেশিতে ডলার বিক্রি করবে। তেমনি মানি এক্সচেঞ্জ অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে মিটিং করে একই সিদ্ধান্ত হয়েছে। এক্ষেত্রে ব্যাংকের এভারেজ রেট থেকে তারা এক টাকা বাড়তি দামে ডলার কিনবে। পরবর্তী সময়ে বিক্রির ক্ষেত্রে এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো এক টাকা থেকে সর্বোচ্চ দেড় টাকা পর্যন্ত মুনাফা করতে পারবে।
তিনি বলেন, এখন ডলার মার্কেট একটা সংকট সময় পার করেছে। এজন্য ব্যাংক ও এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোকে পরিদর্শন করা হচ্ছে। যাতে তারা কোনো রকম অনিয়ম করতে না পারে।
বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নিয়ে ব্যবসা করছে ২৩৫টি মানি চেঞ্জার। কিন্তু মার্কেটে সাতশো’র বেশি মানি চেঞ্জার রয়েছে। বৈধ মানি চেঞ্জার কোনো অনিয়ম করলে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি। কিন্তু যারা অবৈধ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ ব্যাংক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অনুরোধ করা হয়ছে। এ ব্যাপারে তারা অ্যাকশন নিচ্ছে। তাদের অভিযান এখনও চলমান রয়েছে।
বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে মানি এক্সচেঞ্জ অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি হেলাল সিকদার শেয়ার বিজকে বলেন, ব্যাংকগুলোকে যে রকম একটা মার্জিন দেয়া হয়েছে। তেমনি আমাদেরও একটা মার্জিন দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছেÑব্যাংকগুলো এক টাকা মুনাফা করতে পারবে, সে ক্ষেত্রে আমাদের সর্বোচ্চ দেড় টাকা।
কীসের ভিত্তিতে এ রেট সমন্বয় করা হবেÑজানতে চাইলে তিনি বলেন, ব্যাংকগুলো যে রেটে ডলার বিক্রি করবে, তার থেকে এক টাকা বেশিতে মানি চেঞ্জারগুলো কিনবে। কেনা রেটে থেকে সর্বোচ্চ দেড় টাকা পর্যন্ত মুনাফা করতে পারবে। এ বিষয়ে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করবে অ্যাসোসিয়েশন।
চলমান এ সংকটের মধ্যে খোলাবাজারে ডলারের দর গত সপ্তাহে ১২০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। তবে বাজারে ডলারের সরবরাহ বাড়ায় দর কমছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। গতকাল ব্যাংকগুলোর চাহিদা মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৯৫ টাকায় ৪৮ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে।