নিজস্ব প্রতিবেদক: বিনিয়োগের বর্তমান পরিবেশ ও ২০৪১ সালের মিশন নিয়ে ইংরেজিতে প্রবন্ধ উপস্থাপন ও নির্ধারিত আলোচনার পর ছিল প্রশ্নোত্তর পর্ব। এ পর্বে এক ব্যবসায়ী বললেন, ‘বিনিয়োগ পরিবেশের কথা বলছেন! ডলার–সংকটে আমরা ব্যাংকে ঋণপত্র (এলসি) খুলতে পারছি না।’
প্রশ্নকারী প্লাস্টিক ও টিন কনটেইনার উৎপাদনকারী কিউ পেইল লিমিটেড নামের একটি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসির। এ অধিবেশনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমকে কেন রাখা হয়নি, সে প্রশ্নও তিনি তোলেন। উপস্থাপক টি আই এম নুরুল কবির তাঁকে থামানোর চেষ্টা করে বারবার ‘সুনির্দিষ্ট প্রশ্ন করুন’ বলে অনুরোধ করছিলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই তখন সৈয়দ নাসিরের দিকে তাকিয়ে।
সৈয়দ নাসিরের কথা হচ্ছে, এখানে যেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তার প্রায় সব কটির সঙ্গেই এনবিআর জড়িত। তাহলে এনবিআর চেয়ারম্যানকে কেন রাখা হলো না?
ঢাকার একটি হোটেলে গতকাল সোমবার বিকেলে ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফআইসিসিআই) ৬০ বছর পূর্তি উদ্যাপন ও দুই দিনব্যাপী বিনিয়োগ মেলার শেষ দিনে অনুষ্ঠিত ‘বিনিয়োগ পরিবেশ: চলমান পরিস্থিতি ও মিশন ২০৪১’ শীর্ষক অধিবেশনের শেষ পর্যায়ে এই দৃশ্যের অবতারণা হয়।
অধিবেশনের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়াসহ চারজন সৈয়দ নাসিরের প্রশ্নের জবাব দেন।
তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, প্রথমে কোভিড-১৯ ও পরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে কয়েক বছরে বৈশ্বিক অর্থনীতি নানা চড়াই–উতরাই পার করছে। যুদ্ধের কারণে সাত থেকে আটটি পণ্যে অন্তত এক হাজার কোটি মার্কিন ডলার বেশি ব্যয় করতে হয়েছে। তাঁর প্রশ্ন, বিশ্বব্যাপী সারের দাম কত বেড়েছে জানেন? জ্বালানি তেল ও গ্যাসে ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। আরও নানা পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বলেন, ‘১৭ কোটি মানুষের দেশে চাহিদা বেশি হওয়ায় সহায়তাও বেশি দরকার। আমরা অবশ্য বৈশ্বিক পরিপ্রেক্ষিত মাথায় রেখে অনেক সময় কথা বলি না।’ অধিবেশনে এনবিআর চেয়ারম্যানকে কেন রাখা হয়নি, সেই প্রশ্ন এফআইসিসিআইকে করার পরামর্শ দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা এম মাশরুর রিয়াজ। বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রূপালী চৌধুরীর সঞ্চালনায় এতে নির্ধারিত আলোচক ছিলেন বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ, মেট্রো চেম্বারের সভাপতি সাইফুল ইসলাম, জেট্রোর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ইউজি আন্দো ও ঢাকা কোরিয়া ট্রেড সেন্টারের মহাপরিচালক স্যামসু কিম।
এলসি খুলতে না পারা সৈয়দ নাসিরের প্রশ্নের জবাবে এম মাশরুর রিয়াজ বলেন, ‘দেখুন, সমস্যা আছে। তবে উন্নতি হচ্ছে। চলতি হিসাবের ঘাটতি ছিল যেখানে ১ হাজার ৮০০ কোটি ডলার, কমে এখন তা ৪০ কোটি ডলারে নেমে এসেছে, যদিও এর পেছনে অনেক বেদনা আছে।’
জেট্রোর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ইউজি আন্দো বলেন, জাপানেও সব জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। মেট্রো চেম্বারের সভাপতি সাইফুল ইসলাম দাবি করেন, সমস্যার মূলে কোভিড ও যুদ্ধ।