ছামিউল ইসলাম আরিফ, হিলি (দিনাজপুর): ডলার সংকটের কারণে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে কমেছে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য। গত কয়েক মাসের তুলনায় আমদানি নেমে এসেছে অর্ধেকে। ফলে আহরণ হচ্ছে না সরকারের বেঁধে দেয়া রাজস্ব। গত ছয় মাসে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ ৮৬ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। এদিকে এলসি না হওয়ার কারণে পণ্য আমদানি করতে না পারায় ব্যবসা-বাণিজ্য কমে যাচ্ছে বলে জানান আমদানিকারকরা। অপরদিকে বন্দরে কাজকর্ম না থাকায় কষ্টে জীবনযাপন করছেন বন্দর কর্মরত শ্রমিকেরা।
হিলি কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিম্বেবর) হিলি স্থলবন্দরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষমাত্রা ছিল ৩০০ কোটি ছয় লাখ টাকা । আর প্রথম ছয় মাসে সরকার রাজস্ব পেয়েছে ২১৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সহসভাপতি শাহিনুর রেজা শাহিন বলেন, বাংলাদেশের দ্বিতীয় বন্দর দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর। এ বন্দর দিয়ে প্রতিদিন চাল, গম, ভুট্টা, পাথর, টিটাগুড়, গমের ভুসি, ভুট্টার বীজ, আদা, রসুন, মিক্সার মেশিনসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি হয়ে থাকে। তবে বর্তমানে ডলারের সংকটের কারণে ভারত থেকে কমেছে সব ধরনের পণ্য আমদানি।
আমদানিকারক আমিনুল ইসলাম পলাশ বলেন, কয়েক মাস আগেও হিলি স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০টি ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করলেও এখন তা নেমে এসেছে অর্ধেকে। বর্তমানে প্রবেশ করছে ৫০ থেকে ১০০টি ট্রাক। এলসি না হওয়ার কারণে পণ্য আমদানি করতে না পারায় ব্যবসা-বাণিজ্য কমে যাচ্ছে। এতে করে আমরা চাহিদা মত পাথর পার্টিদের দিতে পারছি না। এজন্য তারা আমাদের বকেয়া টাকাও দিচ্ছে না। এতে আমরা বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
আমদানিকারক সাইফুল ইসলাম মন্টু বলেন, করোনার প্রভাব ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমদানি-রপ্তানি কমে গেছে। এছাড়া রাস্তাঘাট প্রশস্ত না হওয়ায় যানজটের কারণে আমদানি-রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে। আবার ভারতে জটিলতার কারণে কিছু পণ্যের মধ্যে গম ও ভুট্টা আমদানি বন্ধ রয়েছে। যানজট নিরসনে রাস্তাঘাট প্রশস্ত ও এলসি করতে পারলে আমদানি-রপ্তানি আবার স্বাভাবিক গতি পাবে। আর সরকারও রাজস্ব পাবে। পানামাপোর্ট জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন প্রতাব মল্লিক বলেন, ডলার সংকটসহ মুল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে আমদানি-রপ্তানির ওপর। ফলে কমেছে পণ্য আমদানি-রপ্তানি। এতে করে বন্দরে কর্মরত শ্রমিকরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আগামী মাসে আমদানি-রপ্তানি বাড়লে বন্দরের যেমন দৈনদিন আয় বাড়বে, তেমনি সরকারও রাজস্ব বেশি পাবে।