Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 1:46 am

ডাকঘর সঞ্চয়ে সুদহার ফিরল আগের জায়গায়

নিজস্ব প্রতিবেদক: ডাকঘরে আমানতের সুদহার কমিয়ে আগের জায়গায় ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সুদহার প্রায় অর্ধেক করার ৩৩ দিন পর গতকাল আবার আগের জায়গায় বহাল করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সই করা প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। ১৭ মার্চ থেকে এ প্রজ্ঞাপন কার্যকর হবে।

যদিও এর আগে ১৩ ফেব্রুয়ারি সুদহার প্রায় অর্ধেক করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এ নিয়ে আমানতকারীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়। আমানতকারীদের সঞ্চয় তুলে নেওয়ারও হিড়িক পড়ে। সমালোচনার মধ্যে সরকার তা প্রত্যাহার করে আগের জায়গায় বহাল রাখার ঘোষণা দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, এক বছর মেয়াদে সুদহার ১০ দশমিক ২০ শতাংশ, যা অর্ধেক নির্ধারণ অর্থাৎ পাঁচ শতাংশ করা হয়েছিল। দুবছর মেয়াদের সঞ্চয়পত্রে সুদহার ১০ দশমিক ৭০ শতাংশ, যা অর্ধেক করে সাড়ে পাঁচ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছিল এবং তিন বছর মেয়াদের সঞ্চয়পত্রে সুদহার ১১ দশমিক ২৮ শতাংশের স্থলে নির্ধারণ করা হয়েছিল ছয় শতাংশ। আমানতকারী চাইলে প্রতি ছয় মাস অন্তর মুনাফা উত্তোলন করতে পারবেন। তবে সে ক্ষেত্রে প্রথম বছরে ৯, দ্বিতীয় বছরে সাড়ে ৯ ও তৃতীয় বছরে ১০ শতাংশ। জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ডাকঘরে সঞ্চয়ে নিট বিনিয়োগ ছিল প্রায় আট হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে তিন বছরমেয়াদি সঞ্চয়পত্রে সাত হাজার ৫০০ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করেছেন গ্রাহক।

সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। এ বছর গত বছরের চেয়ে সঞ্চয়পত্রের সুদের ওপর উৎসে আয়কর কর্তনের হার পাঁচ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। অবশ্য ব্যাংকগুলোর স্থায়ী আমানতের ক্ষেত্রেও সুদের ওপর উৎসে করের হার ১০ শতাংশ এবং যাদের টিআইএন নেই, এ হার তাদের ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ। পাঁচ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্রের সুদের ওপর উৎসে কর পাঁচ শতাংশের পরিবর্তে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। এক লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে কর শনাক্তকরণ নম্বর বা টিআইএন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে উৎসে কর বাড়ালেও এখনও ডাকঘর সঞ্চয়পত্র ছাড়া অন্যান্য সঞ্চয়পত্রে সুদহার কমায়নি সরকার।

এসব শর্তে সরকারের সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ কমে গেছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে এক-তৃতীয়াংশের কিছু কম। সঞ্চয়পত্র নিট বিক্রি হয়েছে ৩২০ কোটি ৬২ লাখ টাকার। আগের বছর একই মাসে বিক্রি হয় তিন হাজার ৮৩৩ কোটি টাকার। প্রসঙ্গত, জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের হিসাবমতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকে জমা হয়েছে ১৬ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা। এর মধ্যে সাধারণ হিসাবে জমা হয়েছে দুই হাজার ৯৩০ কোটি টাকা। মেয়াদি হিসাবে জমার পরিমাণ ১৩ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা।