প্রতিনিধি, কুমিল্লা: কুমিল্লার লাকসামে ডাকাতিয়া নদীতে চলছে অপরিকল্পিতভাবে অবাধে বালি উত্তোলন। ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে নদীর বালি উত্তোলন করে পাইপের মাধ্যমে ভরাট করা হচ্ছে পুকুর-জলাশয়। আর এর ফলে নদীতীরবর্তী ঘরবাড়ি, গবাদি পশুর খামার, কৃষিজমিসহ প্রধানমন্ত্রীর উপহারের একটি বাড়িরও নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
নদীর তীরবর্তী লাকসাম উপজেলার বাকই ইউনিয়নের দুপচর পূর্বপাড়া গ্রামে এ দৃশ্য দেখা গেছে।
দুপচর গ্রামের ভুক্তভোগী স্বজল সিংহ, নেপাল সিংহ, রতন সিং, তৃষ্ণা বড়ুয়াসহ এলাকাবাসী জানান, কয়েক দিন ধরে আমাদের বাড়ির পাশে নদীতে ড্রেজিং মেশিন বসিয়ে মোটা পাইপ লাগিয়ে তপন সিংহের পুকুর ভরাট করা হয়েছে। এতে একদিকে নদীর ওই অংশে বিরাট গর্ত সৃষ্টি হয়ে পাশের বসতবাড়ি, গবাদি পশুর খামার ও মহাশ্মশানে যাওয়ার রাস্তা নদীগর্ভে ভেঙে পড়ছে। এভাবে ড্রেজিং অব্যাহত থাকলে গ্রামের অধিকাংশ বাড়ির অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অন্যদিকে ড্রেজারের বালিযুক্ত পানি কৃষিজমিতে সয়লাব হয়ে যাওয়ায় চলতি রোপা আমনসহ অন্যান্য ফসল বিনষ্ট হচ্ছে।
বাকই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আওয়াল জানান, ‘শুনেছি এটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্প।’ কে করছে, কত টাকার কাজÑএ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান।
এ বিষয়ে লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার একেএম সাইফুল আলম জানান, ‘প্রকল্পটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের, তারাই ভালো বলতে পারবে। আমিও খোঁজ নিয়ে দেখছি।’
পানি উন্নয়ন বোর্ড কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান বলেন, ‘পাউবোর ঠিকাদার ফারুক চৌধুরী ড্রেজিংয়ের কাজটি করছেন। তবে মাটি ব্যবস্থাপনার কাজ স্থানীয় প্রশাসনের। তাছাড়া একস্থান থেকে একটানা মাটি কাটার কোনো নিয়ম নেই। আমাদের ডিজাইন অনুযায়ী মাটি কেটে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হয়। ডিজাইনের বাইরে কাটা হলে বিল পাওয়া যাবে না।’ তিনি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।
এদিকে অপরিকল্পিতভাবে পরিচালিত ড্রেজারটি বন্ধের দাবিতে এরই মধ্যে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছেন স্থানীয়রা। এছাড়া স্থানীয়দের গণস্বাক্ষরিত একটি আবেদন পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দেয়া হয়েছে।