প্রতিনিধি, নোয়াখালী : নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় পাঁচ মিনিটের কথা বলে চার ঘণ্টায়ও ডাক্তার না আসায় অ্যাম্বুলেন্সে সন্তান প্রসব করেছেন এক প্রসূতি নারী। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে ওই নারীর চাচা মো. ফারুক বাদী হয়ে অভিযুক্ত কবিরহাট প্রাইভেট হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও পরিচালকের বিরুদ্ধে পৌরসভার মেয়র বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, সুমি আক্তার (২৫) কবিরহাট পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের জৈনতপুর গ্রামের দাউদুল ইসলামের স্ত্রী। গত রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ৯টার দিকে প্রসূতি সুমিকে কবিরহাট প্রাইভেট হাসপাতালে ডাক্তার দেখানোর জন্য নেয়া হয়। ডাক্তার তাকে আল্ট্রা করানোর সিদ্ধান্ত দেন এবং বলেন, প্রসূতির নরমাল ডেলিভারি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে। তাকে দ্রুত সিজার করাতে হবে। না হয় বাচ্চা ও মায়ের জন্য ঝুঁকি আছে। তখন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্রসূতি নারীর চাচা কবিরহাট প্রাইভেট হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও পরিচালকের সাথে অপারেশনের ব্যাপারে আলোচনা করলে তারা বলেন তাদের সার্বক্ষণিক ডাক্তার থাকেন; রাত ৯টায় অপারেশ হবে। আপনারা দুই ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করুন।
লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়, তাদের কথামতো রক্তের ব্যবস্থা করা হয়। এরপর রাত ৯টা পেরিয়ে গেলেও ডাক্তার আসেননি। অন্যদিকে প্রসূতির ডেলিভারির ব্যথা-যন্ত্রণায় চিৎকার করতে থাকে। রাত ৯টার পর ডাক্তার আসতে তারা ৫ মিনিট-১০ মিনিট বলতে বলতে তখন রাত ১টা ১০ মিনিট হয়ে যায়। কিন্তু কোনো ডাক্তার আসেনি। তখন প্রসূতির কষ্ট দেখে জোরপূর্বক জেলা শহর মাইজদী নেয়ার পথে অ্যাম্বুলেন্সের ভেতর নরমাল ডেলিভারি হয়। পরে নবজাতককে মাইজদীর মুন হাসপাতালে ভর্তি করলে তার অবস্থা খারাপ হওয়ায় এনআইসিউতে ভর্তি করানো হয়।
কবিরহাট প্রাইভেট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম অভিযোগ নাকচ করে বলেন, ওই প্রসূতিকে আমাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয় রাত সাড়ে ১০টার দিকে। রোগীর স্বজনরা ডাক্তারকে গালমন্দ করায় ডাক্তার আসেননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কবিরহাট পৌরসভার মেয়র জহিরুল হক রায়হান বলেন, ভুক্তভোগী প্রসূতির চাচা ফারুক আমাকে বিষয়টি অবহিত করেন। তখন তাকে বলা হয়ে পৌরসভায় লিখিত অভিযোগ করতে। অভিযোগের কপি হাতে পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।