ডাক্তার যখন রোগী

 

‘শুনছেন, ডাক্তার সাহেব বা আপা, আমার এ সমস্যা, ওই সমস্যা। ‘কিছু করুন, না হয় আমি হয়তো আর বাঁচবো না।’ এমন কথা ডাক্তারদের নিয়মিত শুনতে হয়। এভাবে অধিকাংশ সময় রোগী নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটান তারা।

এসবের ফাঁকে নিজের জন্য

আলাদা সময় বের করা, নিজের স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেওয়ার সুযোগ মেলে না বললেই চলে। এ কারণে ডাক্তাররাও অসুস্থ হতে পারেন।

বিষয়টি নিয়ে বিস্তর গবেষণা হয়েছে, হচ্ছে। সমস্যা থেকে মুক্তির উপায় নিয়ে নানা পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ হচ্ছে না কিছুই। প্রকৃত অর্থে ডাক্তার সুস্থ না থাকলে রোগীর চিকিৎসায় এর বাজে প্রভাব পড়বে। এতে কোনো সন্দেহ নেই।

গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণ মানুষের তুলনায় ডাক্তারদের মানসিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার কম নয়। আরও জানা যায়, প্রায় ২৫ শতাংশ ডাক্তার কোনো না কোনো মানসিক দুরবস্থার মধ্য দিয়ে সময় পার করছেন। বয়স্ক ডাক্তারদের ক্ষেত্রে এ প্রবণতা আরও বেশি। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, রেডিওলজি বিশেষজ্ঞ, অবেদনবিদ, সার্জন ও শিশু বিশেষজ্ঞদের মানসিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ডাক্তারদের আত্মহত্যা, বিষণœতায় ভোগা, মাদকদ্রব্য নেওয়ার সংখ্যাও কম নয়। এ প্রসঙ্গে ইংল্যান্ডের উদাহরণ দেওয়া যায়। সেখানে প্রায় ১৫ ডাক্তারের মধ্যে একজন অ্যালকোহল ও অন্যান্য মাদক নিয়ে থাকেন।

 

কারণ

ব্যক্তিজীবনে একজন ডাক্তারের কিছু গুণ থাকা দরকার। এগুলো অর্জন করতে গিয়ে অনেক সময় ব্যক্তিত্বের ওপর চাপ পড়ে। বাধ্য হয়ে স্বকীয়তা ছেড়ে নতুন প্রেক্ষাপটে সরে দাঁড়াতে হয়। অনেকে এ পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারেন না। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মন।

কোনো কোনো ক্ষেত্রে অনেক ডাক্তার নিজের রোগ নিয়ে অবহেলা করেন। কেউবা শারীরিক সমস্যা লুকিয়ে রাখেন। আবার কেউ নিজেকে অন্তরালে রাখতেই পছন্দ করেন। কর্মজীবনে বিরতিহীন মানসিক শ্রম ও নানা মানুষের তিক্ততাপূর্ণ অভিজ্ঞতাগুলোর অংশীদার হওয়াই এর অন্যতম কারণ বলে উঠে এসেছে গবেষণায়।

 

কীভাবে বুঝবেন

সাধারণত এ ধরনের সমস্যায় আক্রান্তদের মধ্যে ইনসমনিয়া বেশি দেখা দেয়। অল্পতে রেগে যাওয়া, খিটখিটে আচরণ, কারণে-অকারণে অস্বস্তি বোধ, বিষণœতায় ভোগা প্রভৃতি লক্ষণ দেখা দেয়।

 

সুস্থ থাকার জন্য

ছোট ছোট সমস্যায় বিচলিত না

হওয়াই ভালো

দৈনন্দিন কাজ আনন্দের সঙ্গে সম্পন্ন করা শ্রেয়

দীর্ঘক্ষণ কাজের মধ্যে ডুবে না থেকে ঘণ্টাখানেক পরপর বিরতি নেওয়া

সপ্তাহে অন্তত একদিন নিজের জন্য আলাদা সময় রাখা

নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করে মানসিকভাবে চাঙ্গা থাকা

সব ধরনের মাদক থেকে দূরে থাকা

এর বাইরে নিজের সুস্বাস্থ্যের জন্য অন্য ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে। নানা সমস্যা থেকে উত্তরণে নির্দিষ্ট ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলতে পারেন।

 

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০