শোবিজ ডেস্ক: ওয়েলশের নাগরিক স্টার্ডি কেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় রয়্যাল আর্মির হয়ে অংশ নিয়েছিলেন ১৯৪০ সালের ডানকার্ক অভিযানে? ৭৭ বছর পর ক্রিস্টোফার নোলানের সিনেমা ‘ডানকার্ক’ তাকে ফিরিয়ে নিয়ে গেল সেসব দিনে।
৯৭ বছর বয়সী স্টার্ডি এখন বাস করেন কানাডায়। সেখানে সম্প্রতি হয়ে যাওয়া ‘ইনসেপশন’খ্যাত নির্মাতার সর্বশেষ ছবি ‘ডানকার্ক’-এর উদ্বোধনী প্রদর্শনী দেখতে গিয়েছিলেন তিনি। সিনেমা শেষে অশ্রুসজল চোখে স্টার্ডি বললেনÑ‘ডানকার্ক’ নিছক বিনোদন নয়; এটি তাকে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সেসব ভয়াল দিনে, যখন নাৎসি বাহিনীর হাত থেকে হাজার হাজার সৈন্যকে বাঁচাতে নিরন্তর লড়াই করছিলেন তারা।
কানাডার গ্লোবাল নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্টার্ডি বলেন, ‘আমি কখনও ভাবিনি এগুলো আমি আবার দেখবো। এটা দেখে মনে হচ্ছিল আমি আবার সেদিনগুলোয় ফিরে গেছি।’ ক্রিস্টোফার নোলান তার সিনেমাটি তৈরি করেছেন ১৯৪০ সালের ডানকার্ক যুদ্ধ অবলম্বনে। ইতিহাসের অন্যতম রক্তক্ষয়ী এ যুদ্ধে ৯ দিনে প্রাণ হারান হাজার হাজার সৈন্য। স্টার্ডি ছিলেন সে যুদ্ধের সৈনিক, নাৎসি বাহিনীর সঙ্গে মিত্রশক্তির লড়াই থেকে বেঁচে ফেরা অল্প কয়েকজনের মধ্যে একজন।
ওই সময়ের কথা মনে করে স্টার্ডি বলেন, ‘আমি ছিলাম ওই ছোট নৌকাগুলোর একটিতে, যেগুলোতে করে আটকেপড়া সৈন্যদের উদ্ধার করা হচ্ছিল। আজ আমি ওই দিনগুলোকে সিনেমায় দেখার সুযোগ পেলাম। কিন্তু সে সময় ওই সমুদ্রসৈকতটিতে কী ঘটেছিল মনে পড়ায় মন বিষাদে ভরে গেছে।’
যুদ্ধে অনেক প্রিয়জনকে হারিয়েছেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘সিনেমাটিতে আমার অনেক পুরোনো বন্ধুদের যেন নতুন করে দেখতে পেলাম, যারা ওই যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছিলেন। এরপর আমি উত্তর আটলান্টিকে চলে গিয়েছিলাম। আমার অনেক বন্ধুকে ওই যুদ্ধে হারিয়েছি।’
তরুণ প্রজন্মের প্রতি সিনেমাটি দেখার আহ্বান জানিয়ে স্টার্ডি বলেন, ‘স্রেফ বিনোদনের জন্য ডানকার্ক দেখতে যাবে না। এটি দেখে ভাবো এবং যখন বড় হবে, তখনও এটি নিয়ে ভাববে। রাতে আমি কেঁদেছি; কারণ যুদ্ধের শেষ নেই। কখনও শেষ হবে না। আমরা মানব প্রজাতি কত কিছু অর্জন করেছি! আমরা চাঁদে গিয়েছি; কিন্তু এসব নির্বুদ্ধিতা থামাতে পারিনি।’