বয়স, ওজন ও উচ্চতা, কাজের ধরন, কায়িক শ্রমের পরিমাণ, জীবনযাপন পদ্ধতি, আর্থিক অবস্থা সবকিছু বিবেচনায় এনে ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্যতালিকা করা হয়। পুনরাবৃত্তি ও বিরক্তি ঠেকাতে রোজ একই ধরনের খাবার না খেয়ে বৈচিত্র্য আনারও চেষ্টা করতে হবে।
ডায়াবেটিস ধরা পড়লে প্রথমেই যা করা দরকার তা হলো সাদা চিনিযুক্ত সব খাবার বর্জন করা। চিনি বা শর্করা অন্যান্য খাবারেও আছে, তাই সরাসরি চিনি বাদ দিলে ক্ষতি নেই।
খাবারে শর্করা বিশেষণের হ্রাস-বৃদ্ধির পরিমাপ হলো এই জিআই। এর সূচক ১ থেকে ১০০। যেসব খাবার উচ্চ জিআইযুক্ত, সেগুলো দ্রুত রক্তে শোষিত হয় ও রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দেয়। অন্যদিকে যেসব খাবারে নি¤œ জিআই, সেগুলো ধীরে ধীরে শোষিত হয় বলে শর্করা দ্রুত বাড়াতে পারে না।
সূচক ৫৫-এর নিচে হলে তাকে নি¤œ জিআই খাবার বলা যায়। যেমন সব ধরনের শাক, ডাল, পাতলা দুধ, মাশরুম, বাদাম, পানিযুক্ত সবজি প্রভৃতি।
মধ্যম জিআই (৫৫-৭০) খাবার হলো লাল চাল ও আটা, ভুট্টা, খই, মিষ্টি আলু, ব্রাউন নুডলস বা পাস্তা প্রভৃতি।
উচ্চ জিআইযুক্ত খাবার (৭০-এর ওপর) হলো ময়দার রুটি বা পরোটা, আতপ চাল, পোলাও, খেজুর, তরমুজ, মুখিকচু প্রভৃতি।
খাবার বাছাইয়ের বেলায় জিআইয়ের বিষয়টা মাথায় রাখবেন। প্রতি বেলায় একটি নি¤œ জিআই খাবার বেছে নিন। উচ্চ জিআইযুক্ত খাবার যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন।
ডায়াবেটিস হলে ক্ষতিকর চর্বি জমে রক্তে ও যকৃতে। ফ্যাটি লিভার ও হƒদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। তাই চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণে সতর্ক হবেন। সম্পৃক্ত চর্বি যেমন ঘি, মাখন, মাংসের সঙ্গে লেগে থাকা চর্বি ক্ষতিকর।
অসম্পৃক্ত চর্বি যেমন ওমেগা-৩, সামুদ্রিক মাছের তেল, বাদাম উপকারী। আমিষ বাছাইয়ের বেলায় যেসব আমিষে চর্বি কম যেমন মাছ, ডাল, ডিম, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার বেছে নিন। ভোজ্যতেলের পরিমাণ কমান। প্রতিদিন তাজা ফলমূল খাবেন, তবে হিসাব করে। টক ফল প্রচুর খেতে পারেন। তবে একবারে বেশি পরিমাণ না খেয়ে সারা দিনের খাবার ৫ বা ৬ ভাগে ভাগ করে খান। দুটো খাবারের মধ্যে তিন-চার ঘণ্টার ব্যবধান রাখবেন। বিশৃঙ্খলভাবে যখন-তখন খাবেন না। ডেজার্ট হিসেবে মিষ্টি খাবারের বদলে টক দই, ফল খেতে পারেন। তামাক, জর্দা, অ্যালকোহল বর্জন করুন।
আখতারুন নাহার
পুষ্টিবিদ