ডায়াবেটিস রোগীর ফল-সবজি

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের গ্লাইসেমিক সূচক ও গ্লাইসেমিক লোড দেখে খাবার নির্বাচন করতে হবে। গ্লাইসেমিক সূচক নির্দেশ করে, কোন খাবার খেলে কত দ্রুত রক্তে সুগার বাড়াবে। আর গ্লাইসেমিক লোড দিয়ে খাবারের প্রতি পরিবেশন সাইজে রক্তে শর্করার পরিমাণ কতটুকু বাড়ল বা কমল, তা বোঝা যায়।

সব সবজি ও ফলে একই মাত্রার চিনি বা ফাইবার থাকে না। যেসব সবজিতে ফাইবার বেশি, সেগুলোর শর্করা ধীরে ধীরে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে। শাকসবজি দুটি ভাগ রয়েছেÑ১. নন-স্টার্চি ও ২. স্টার্চি।

নন-স্টার্চি সবজি: নন-স্টার্চি বা কম শ্বেতসারবহুল সবজিতে কার্বোহাইড্রেট খুব কম থাকে। এটি ফাইবারের ভালো উৎস। এসব সবজিতে ভিটামিন ও খনিজও রয়েছে। তাই স্বাস্থ্যের ওপর ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে। নন-স্টার্চি সবজি হচ্ছে লাউ, চিচিঙ্গা, ঝিঙে, ধুন্দুল, লেটুসপাতা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শসা প্রভৃতি। এ ছাড়া প্রতিদিন যেকোনো রঙের শাক খেতে পারেন।

স্টার্চি সবজি: স্টার্চি বা শ্বেতসারবহুল শাকসবজিতে প্রচুর পুষ্টি আছে, কিন্তু কার্বোহাইড্রেট বেশি। এর মানে রক্তে গ্লুকোজ বাড়াতে কিছুটা প্রভাব রাখে। এগুলো পরিমাণমতো খেতে হবে। এসব সবজি হচ্ছে আলু, গাজর, মটরশুঁটি, ভুট্টা, শালগম, বিট, কাঁচকলা, কলার থোড়, করলা, মিষ্টিকুমড়া, মিষ্টি আলু প্রভৃতি।

ফল: মিষ্টি ফলে প্রাকৃতিক শর্করা থাকে, তাই পরিমিতভাবে খেতে হবে। যেমন একটি মাঝারি আপেল, কমলা, নাশপাতি অর্ধেক, ছোট একটি কলা প্রভৃতি। ফল যদি স্টার্চি ও স্বাদে মিষ্টি হয়, তাহলে ৫০ থেকে ৭৫ গ্রাম খেতে পারেন। ফলের মধ্যে কার্বোহাইড্রেটের পাশাপাশি ভিটামিন ও মিনারেলস থাকে। তবে রক্তে শর্করার মাত্রা অনুযায়ী ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিকে এক থেকে দুই রকমের ফল দেয়া যায়। দৈনিক একটি মিষ্টি ও টক ফল খেতে পারেন।

টিপস: সবজি রান্নার পদ্ধতির ওপর নির্ভর করে রক্তে সুগার বাড়তে পারে। যেমন আলু সেদ্ধ থেকে ভাজলে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বাড়তে পারে। আবার গাজর কাঁচা থেকে রান্না করে খেলে চিনির পরিমাণ বাড়তে পারে; গোটা ফল না খেয়ে জুস করে খেলে রক্তে সুগার বাড়তে পারে। এজন্য ফলের রস ও সবজির স্যুপ এড়িয়ে চলা উচিত; ফলমূল আহারের সঙ্গে খেলে রক্তে শর্করা বাড়তে পারে; শুধু আলু বা স্টার্চি সবজি ভাতের সঙ্গে খেলে রক্তে শর্করা বাড়তে পারে; সবজির মধ্যে সব সময় বিভিন্ন রঙিন শাকসবজি থাকা ভালো। রঙিন সবজি, যেমন লাল, হলুদ, কমলা প্রভৃতি বর্ণের সবজিতে লাইকোপেন, ক্যারোটিনয়েড, ভিটামিন ‘এ’ প্রভৃতি থাকায় সুগার রোগীর হার্ট, ত্বক ও চোখ ভালো থাকে। এ ছাড়া সবুজ শাকসবজি লেটুসপাতা, পালংশাক, ঢ্যাঁড়শ, ব্রকলি, বাঁধাকপি, মটরশুঁটি প্রভৃতি সবজিতে ম্যাগনেশিয়াম থাকে, যা ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায়;  ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মিক্সড সালাদ স্বাস্থ্যসম্মত। যেমন টমেটো, লেটুসপাতা, ধনেপাতা, শসা, মুলা, পেঁপে প্রভৃতি।

লিনা আকতার

পুষ্টিবিদ

রাইয়ান হেলথ কেয়ার হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার, দিনাজপুর

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০