Print Date & Time : 26 June 2025 Thursday 8:03 pm

ডিআইজি মিজানের স্ত্রী-ভাইয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

নিজস্ব প্রতিবেদক: অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় সাময়িক বরখাস্ত পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানের স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রতœা ও ছোট ভাই মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। গতকাল ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েস অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। পাশাপাশি, আগামী ৩ মার্চ গ্রেপ্তার-সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য করেন আদালত।

গত ৩০ জানুয়ারি দুদক পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদ এ অভিযোগ দাখিল করেন। মিজান ছাড়া অভিযুক্ত অপর আসামিরা হলেন তার স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্না ওরফে রত্না রহমান, ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান ও ভাগ্নে মাহমুদুল হাসান। মাহমুদুল হাসান রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় এসআই হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

এদিকে গত ১ জুলাই আগাম জামিনের জন্য হাইকোর্টে গেলে ডিআইজি মিজানকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ। এ সময় তাকে তাৎক্ষণিক হাইকোর্ট পুলিশের হাতে তুলে দেন আদালত। গ্রেফতারের পর তাকে শাহবাগ থানায় নেওয়া হয়। পরদিন ডিআইজি মিজানের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত।

ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন মিজানুর রহমান। বিয়ে গোপন করতে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্ত্রীকে গ্রেফতার করানোর অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে। এছাড়া এক সংবাদ পাঠিকাকে হত্যার হুমকি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে বিমানবন্দর থানায় তার বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়রিও করা হয়েছিল। গত বছরের জানুয়ারির শুরুর দিকে নারী নির্যাতনের অভিযোগে তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত করা হয়।

এরপর দুদক কর্মকর্তার সঙ্গে ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি সামনে আসার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ডিআইজি মিজানকে সাময়িক বরখাস্তের একটি প্রস্তাব রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। ২৫ জুন মিজানুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করার প্রস্তাবে অনুমোদন দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। মিজানের ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে পুলিশ প্রশাসন। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন। যদিও নারী নির্যাতন, ঘুষ প্রদান, অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ নানা অপকর্মের অভিযোগে দুবছর ধরে মিজানুরের নাম আলোচনায় এলেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এর আগে গত ২৪ জুন তিন কোটি সাত লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও তিন কোটি ২৮ লাখ টাকা অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগে মিজানুরের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। এ মামলায় মিজানুর রহমান, স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রতœা, ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান ও ভাগনে পুলিশের কোতোয়ালি থানার এসআই মো. মাহমুদুল হাসানকেও আসামি করা হয়।