নিজস্ব প্রতিবেদক :‘তিন দিন ধরে জন্ম নিবন্ধন সনদের জন্য কাউন্সিলরের কার্যালয়, কম্পিউটারের দোকান ও সিটি করপোরেশনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। কোথাও কোনো সমাধান পাচ্ছি না। এটাই কি ডিজিটাল বাংলাদেশ?’ এভাবেই ক্ষোভ নিয়ে ভোগান্তির কথা বলছিলেন মগবাজারের অধিবাসী বীথি আক্তার।
তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন থেকে বলা হচ্ছে, সার্ভার ডাউন। ঠিক হতে আরও কয়েক দিন লাগবে। এদিকে জন্ম নিবন্ধন ছাড়া স্কুলে ভর্তি নিচ্ছে না। কমিশনার কার্যালয় ও সিটি করপোরেশনে কয়েক দফায় চেষ্টা করেও কোথাও জš§ নিবন্ধন করাতে পারছি না। সব জায়গা থেকে বলা হচ্ছে, সার্ভার ডাউন। একটা সমস্যা হতেই পারে, তাই বলে তা সমাধানের জন্য দিনের পর দিন লাগবে?
একই রকম অভিজ্ঞতার কথা বললেন রামপুরার অধিবাসী মাঈনুল আহসান। তিনি বলেন, ‘আমি দেশের বাইরে চলে যাব, ভাবলাম ছেলের জন্ম নিবন্ধনের কাজটা করে যাই। হাতে সময় কম, দুই দিন হলো আমার ছেলের জন্ম নিবন্ধন করতে চেষ্টা করছি। কোনোভাবেই হচ্ছে না। খোঁজ নিয়ে জানলাম সার্ভার বন্ধ। একটা জাতীয় সেবা প্রায় সপ্তাহ খানেক থেকে বন্ধ, ঠিক হতে আরও কয়েক দিন লাগবে। তাহলে দেশ ডিজিটাল করার মানে কী? দেশের পরতে পরতে অনিয়ম আর অবহেলা। দেখার কেউ নেই। অবশ্য এসব বলেও কোনো লাভ হবে না, তাই বলি না।’
রাজধানীর উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) কয়েক দিন থেকেই বন্ধ রয়েছে জন্ম নিবন্ধন সেবা। অনলাইন ঘেঁটেও তার সত্যতা মেলে। কয়েকটি কমপিউটারের দোকানে খোঁজ নিলে সেখান থেকেও বলা হচ্ছে সার্ভারের সমস্যার কথা। দোকানিরা বলেন, কদিন পরপরই এরকম সমস্যা পড়তে হয় জন্ম নিবন্ধন করতে। সময়মতো জš§ নিবন্ধন সেবা দিতে না পারায় অনেক কাস্টমারের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হচ্ছে। এভাবে আরও কদিন চলবে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।’
জানতে চাইলে ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান শেয়ার বিজকে বলেন, ‘আমি বিষয়টি অবগত। সাময়িকভাবে জন্ম নিবন্ধন সেবা বন্ধ। আসলে আমরা কেবল সার্ভিস প্রোভাইড করি। টেকনিক্যাল পুরো বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করে রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়। আমরা তাদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রক্ষা করছি। রেজিস্ট্রার কার্যালয় থেকে বলা হচ্ছে, এটি আরও আপডেট করতে কাজ চলছে। শেষ হতে আরও সপ্তাহের মতো সময় লাগবে।’ সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশ ডিজিটাল হলেও ডিজিটাল নিয়ন্ত্রণ বা ডিজিটাল সমাধান অত্যন্ত নিন্মমুখী। জন্ম নিবন্ধন সেবার মতো একটি জাতীয় সেবা কয়েক দিন থেকে বন্ধ, ঠিক হতে আরও কয়েক দিন সময় লাগবে। কোনো সভ্য দেশে এমনটা নেই। সমস্যা থাকতেই পারে। সিসটেম ডেভেলপমেন্টের জন্য সার্ভার বন্ধ রাখা হলে বিকল্প উপায়ে চালুর ব্যবস্থা করা দরকার ছিল। অন্ততপক্ষে যাদের খুব জরুরি, তাদের কথা মাথায় রেখে।
