আতাউর রহমান: নির্ধারিত সময় থেকে দুই দফা বাড়ানোর পরও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নিয়োগ দিতে ব্যর্থ হয়েছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। কারণ একাধিকবার সময় দিয়েও যোগ্য ব্যক্তির মনোনয়ন ডিএসইর কাছ থেকে পায়নি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তাই পুনরায় ডিএসইকে এমডি নিয়োগে বিজ্ঞাপন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। সম্প্রতি এ বিষয়ে নির্দেশ দিয়ে ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত এমডি বরাবর চিঠি পাঠিয়েছে বিএসইসি। চিঠিতে এমডি নিয়োগের বিজ্ঞাপনে বেশ কয়েকটি যোগ্যতা উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, সাবেক এমডি তারিক আমিন ভূঁইয়ার স্থলে নতুন এমডি নিয়োগের জন্য ডিএসইর তৎকালীন চেয়ারম্যান ও সাবেক সচিব ইউনুসুর রহমানের বোর্ড তোবারক হোসেন ভূঁইয়া, সাইফুর রহমান মজুমদার ও সাখাওয়াত হোসেনের নাম প্রস্তাব করেছিল। প্রথম দফায় এ তিনজনসহ সাতজনের কাউকে যোগ্য মনে করেনি ডিএসইর নমিনেশন ও রেমুনেরাশন কমিটি। পরে আবার কমিটিকে এ সাতজনের মধ্যে যোগ্য ব্যক্তির নাম প্রস্তাব আকারে জমা দিতে বলা হয়। সেখানে থেকে তিনজনের নাম প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু তাদের মধ্যে কাউকে যোগ্য মনে করেনি বিএসইসি। যে কারণে পরবর্তীকালে সময় বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে গেলেও ডিএসই যোগ্য কোনো ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিতে না পারায় এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
এর আগের নির্দেশনা ও চিঠির বিষয়ে উল্লেখ করে বিএসইসির চিঠিতে বলা হয়েছে, এমডি পদের জন্য ডিএসইকে উপযুক্ত এবং যোগ্য প্রার্থী সন্ধানের জন্য
নিয়োগের একটি নতুন বিজ্ঞাপন প্রকাশ করার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। সেক্ষেত্রে উল্লেখ্য, নতুন বিজ্ঞাপনে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের জন্য ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (বোর্ড এবং প্রশাসন) রেগুলেশন, ২০১৩-এ বর্ণিত মানদণ্ড থাকতে হবে। সেই সঙ্গে ফিনটেক, আইটি ও গভর্ন্যান্স সম্পর্কিত জ্ঞান অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে এম সাইফুর রহমান মজুমদার ডিএসইর নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত এমডি হিসেবে কাজ করবেন বলে জানায় বিএসইসি।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করেন ততকালীন এমডি তারিক আমিন ভূঁইয়া। নিয়ম অনুযায়ী, ডিএসইর এমডি পদ খালি হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে বিএসইসি এ পদে নিয়োগ দেবে। সে লক্ষ্যে এমডি পদে নিয়োগের জন্য গত বছরের ৬ অক্টোবর জাতীয় পত্রিকা ও ডিএসইর ওয়েবসাইটে এমডি পদের জন্য যোগ্য প্রার্থীদের কাছ থেকে আবেদন চেয়ে বিজ্ঞাপন দেয়া হয়।
সেখান তিনজন প্রার্থী বাছাই করে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য ৭ ডিসেম্বরের মধ্যে বিএসইসিতে জমা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে ডিএসইর নমিনেশন ও রেমুনেরাশন কমিটি তিনজন প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করতে পারেনি।
এরপর বিএসইসির কাছে ৪৫ দিন সময় বাড়ানোর আবেদন করলে ডিএসইকে এক মাস সময় দেয়া হয়। ওই সময়ের মধ্যেও প্রস্তাব জমা দেয়নি। পরে দ্বিতীয় দফায় আবার সময় বাড়ানোর আবেদন করে ডিএসই। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২ মাস সময় বাড়ায় বিএসইসি, যা গত মার্চে শেষ হয়েছে।
এদিকে প্রবিধান অনুসারে ডিএসইর এমডি নিয়োগের প্রক্রিয়ার ধাপগুলো হলোÑ প্রথমত ডিএসইর নমিনেশন ও রেমুনেরাশন কমিটি এমডি পদের জন্য আবেদনকারীদের মধ্য থেকে কমপক্ষে ৩ জন প্রার্থীকে নির্বাচন করবে। দ্বিতীয়ত ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ নমিনেশন ও রেমুনেরাশন কমিটি দ্বারা নির্বাচিতদের মধ্য থেকে কমপক্ষে ৩ জন প্রার্থীর সুপারিশ করবে। সবশেষে বিএসইসি উল্লিখিত পদের জন্য বোর্ডের সুপারিশকৃতের মধ্যে থেকে একজন আবেদনকারীকে অনুমোদন করবে। এছাড়া প্রবিধানে লেখা আছে, যদি পরিচালনা পর্ষদ এমডি বা সিইও নিয়োগে ব্যর্থ হয় তবে কমিশন একজনকে নিয়োগ দিতে পারে।