পুঁজিবাজারে অনেক সংস্কার হয়েছে; কিন্তু ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে কিছু সংস্কার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। ডিএসইতে একটি শক্তিশালী রিসোর্স সেন্টার থাকা দরকার। বিশেষ করে করপোরেট গভর্নেন্সে একজন বিজ্ঞ চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট (সিএ) থাকবেন। যিনি বাজারের আর্থিক বিষয়ের বিভিন্ন সমস্যা স্টক এক্সচেঞ্জকে ধরিয়ে দেবেন। এর পাশাপাশি একটি মার্কেটিং টিম থাকবে। যারা বাজারে ভালো কোম্পানিগুলো আনবে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়গুলো আলোচিত হয়।
আহমেদ রশীদ লালীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মার্কেন্টাইল ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিডেটের সিইও ফাহমিদা হক ও দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের ডেপুটি এডিটর মো. সাজ্জাদুর রহমান।
ফাহমিদা হক বলেন, গতকাল বিশ্বজুড়ে নারী দিবস পালিত হয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিনটি বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতায় পালন করা হয়েছে। সবাইকে নারী দিবসের শুভেচ্ছা। জাতীয় উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রে পুরুষের পাশাপাশি নারীরা ঘরোয়া কাজ থেকে শুরু করে অফিস-আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ আরও অনেক কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের নারীরা আগের তুলনায় ধীরে ধীরে অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। একটি দেশের উন্নয়নে নারীর ভূমিকা অনস্বীকার্য। ব্যবসা-বাণিজ্যসহ অন্যান্য খাতে এখন নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে; কিন্তু পুঁজিবাজারে পিছিয়ে পড়ছে নারীরা। অর্থাৎ, পুঁজিবাজারে তাদের বিচরণ তুলনামূলক অনেক কম। আবার এখন বাজার অস্থিতিশীল হওয়ায় বিনিয়োগে আগ্রহ হারাচ্ছেন তারা। তবে বিনিয়োগের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারলে বাজারে অন্যদের সঙ্গে নারীরও অংশগ্রহণ বাড়বে বলে মনে করি।
মো. সাজ্জাদুর রহমান বলেন, বর্তমানে বাজারে যে অবস্থা, তাতে বলা যায়Ñবাজারের ওপর আস্থা প্রতিনিয়ত হারাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। আর এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে সূচকেও। বাজারে যে নতুন কোম্পানিগুলো আসছে, সেগুলোরও অবস্থা নাজুক। ক্রমাগত বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কমছে। আসছে না কোনো ভালো কোম্পানি। এখন দেশের অর্থনীতি একটু ধীরগতিতে রয়েছে। ব্যাংক ও আর্থিক খাতের অবস্থা তেমন ভালো নেই। এর প্রভাব বাজারে পড়ছে। কারণ, বাজারে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের বড় ভূমিকা রয়েছে। আসলে সব বিষয় মিলেই বাজারে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস বিশ্বে এখন আতঙ্ক। বিশ্বের অর্থনীতিতে এখন একটি বড় পতন দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। কারণ, দেশের অনেক খাত চীননির্ভর। বিশেষ করে রপ্তানিনির্ভর বস্ত্র খাতে বিভিন্ন দ্রব্য আমদানি এখন হুমকিতে রয়েছে। এ শিল্পের অনেক প্রয়োজনীয় রাসায়নিক এবং যন্ত্রাংশসহ আরও অনেক খাতের কাঁচামাল আমদানি করা হয়ে থাকে। দেশের অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়বেই। এছাড়া আমদানি ও রপ্তানি খাতের সূচক নেতিবাচক অবস্থায় রয়েছে। আবার সাম্প্রতিক কিছু সিদ্ধান্ত আর্থিক খাতে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এসব বিষয় বিবেচনা করলে সামনে দেশের অর্থনীতি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করি।
তিনি আরও বলেন, পুঁজিবাজারে অনেক সংস্কার হয়েছে। কিন্তু ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে কিছু সংস্কার করা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে একটি শক্তিশালী রিসোর্স সেন্টার থাকা দরকার। বিশেষ করে করপোরেট গভর্নেন্সে একজন বিজ্ঞ চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট থাকবেন। যিনি বাজারের আর্থিক বিষয়ের বিভিন্ন সমস্যা স্টক এক্সচেঞ্জকে ধরিয়ে দেবেন। এর পাশাপাশি একটি মার্কেটিং টিমও থাকবে। যারা বাজারে ভালো কোম্পানিগুলো আনবে। আসলে আমাদের বাজারের রিসোর্স সেন্টারটি তেমন শক্তিশালী নয়। বিষয়টি হতাশার। এখন পর্যন্ত স্টক এক্সচেঞ্জে একটি শক্তিশালী রিসোর্স সেন্টার তৈরি করতে পারল না। এখন এ বিষয়গুলো শক্তিশালী করা বাধ্যতামূলক হয়ে পড়েছে।
শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ