নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহজুড়ে সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারদর পতনের পাশাপাশি প্রধান সূচকের পতন দেখা গেছে। একইসঙ্গে দৈনিক গড় লেনদেন ২০ দশমিক ৪৩ শতাংশ কমেছে। অন্যদিকে গত সপ্তাহে বাজার মূলধন কমেছে শূন্য দশমিক ৭৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে ৫ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে, আর গত সপ্তাহে ৫ কার্যদিবস লেনদেন হয়।
সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত সপ্তাহে মোট ৪১২টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৮৫টির, কমেছে ২৯০টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ১৭ কোম্পানির শেয়ারদর। লেনদেন হয়নি ২০টির। দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৭৬৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছিল ৯৬০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ২০ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
গত সপ্তাহে দর বৃদ্ধির তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে রিলায়েন্স ওয়ান দি ফার্স্ট স্কিম অব রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স মিউচুয়াল ফান্ড। আলোচিত সময়ে মিউচুয়াল ফান্ডটির ইউনিটদর বেড়েছে ২৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এর পরের অবস্থানগুলোয় থাকা যথাক্রমে লিগ্যাসি ফুটওয়্যার লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ২১ দশমিক ২১ শতাংশ। এদিকে সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে শেয়ারদর ২ দশমিক ৯৭ শতাংশ বা ২ টাকা ৪০ পয়সা কমে প্রতিটি সর্বশেষ ৭৮ টাকা ৩০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দরও ছিল একই। দিনভর কোম্পানিটির শেয়ারদর সর্বনিম্ন ৭৮ টাকা ৩০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ৮২ টাকায় লেনদেন হয়। দিনজুড়ে ৫ লাখ ৩৪ হাজার ৬০৩টি শেয়ার মোট ১ হাজার ৮৪ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ৪ কোটি ২৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা। আর গত এক বছরের মধ্যে শেয়ারদর ৫৪ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ১৪০ টাকার মধ্যে ওঠানামা করে।
সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ১৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ। সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে শেয়ারদর ১ দশমিক ১০ শতাংশ বা ১ টাকা বেড়ে প্রতিটি সর্বশেষ ৯২ টাকা ১০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দরও ছিল একই। দিনভর কোম্পানিটির শেয়ারদর সর্বনিম্ন ৮৮ টাকা ৪০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ৯৩ টাকা ৪০ পয়সায় লেনদেন হয়। দিনজুড়ে ৪ লাখ ৬১ হাজার ২০৩টি শেয়ার মোট ১ হাজার ২০ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ৪ কোটি ২০ লাখ ৯০ হাজার টাকা। আর গত এক বছরের মধ্যে শেয়ারদর ৬৬ টাকা ১০ পয়সা থেকে ১১৮ টাকার মধ্যে ওঠানামা করে।
ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ১৭ দশমিক ৪০ শতাংশ। ই-জেনারেশন লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ১৬ দশমিক ২২ শতাংশ। ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন বাংলাদেশের শেয়ারদর বেড়েছে ১৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ। ইউনিলিভার কনজুমার কেয়ার লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ১৫ দশমিক ২৫ শতাংশ। গোল্ডেন হার্ভেস্ট এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ১৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। মুন্নু সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ১২ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এছাড়া খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ।
ই-জেনারেশন লিমিটেড গত সপ্তাহে দৈনিক গড়ে ৩০ কোটি ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে এবং সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করছে কোম্পানিটি। আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনে কোম্পানিটির অবদান ৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ। এদিকে গতকাল ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৬ দশমিক ৬১ শতাংশ বা ৩ টাকা ২০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি সর্বশেষ ৫১ টাকা ৬০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দরও ছিল একই। ওইদিন ৬১ লাখ ৬৯ হাজার ৪১৯টি শেয়ার মোট ৫ হাজার ৩২৪ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ৩০ কোটি ৮২ লাখ টাকা। দিনভর শেয়ারদর ৪৭ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৫২ টাকা ২০ পয়সায় লেনদেন হয়। এক বছরের মধ্যে শেয়ারদর ৩০ টাকা ৪০ পয়সা থেকে ৫৩ টাকা ৫০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করে। কোম্পানিটি ২০২১ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘এ’ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে। ১০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ৭৫ কোটি টাকা। কোম্পানিটির মোট সাত কোটি ৫০ লাখ শেয়ার রয়েছে। ডিএসই থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্যমতে মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা বা পরিচালকদের কাছে ৩১ দশমিক ৩৯ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩৭ দশমিক ২১ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে শূন্য দশমিক ৫৫ শতাংশ এবং ৩০ দশমিক ৮৫ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।