নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহজুড়ে সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারদর কমায় সূচকের পতন দেখা গেছে। একইসঙ্গে দৈনিক গড় লেনদেন ৫১ দশমিক ৩০ শতাংশ কমেছে। অন্যদিকে গত সপ্তাহে বাজার মূলধন কমেছে ২ দশমিক ২৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে, আর গত সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবস লেনদেন হয়।
সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত সপ্তাহে মোট ৩৯৪টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৩২টির, কমেছে ৩৫৭টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৫ কোম্পানির শেয়ারদর। লেনদেন হয়নি ১৯টির। দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৬২৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ২৮২ কোটি ২২ লাখ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ৫১ দশমিক ৩০ শতাংশ।
এদিকে গত সপ্তাহে দর বৃদ্ধির তালিকায় শীর্ষে ওঠে এসেছে ব্যাংক খাতের কোম্পানি মিডল্যান্ড ব্যাংক পিএলসি। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ১২ দশমিক ০৯ শতাংশ। সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর ১ দশমিক ২৬ শতাংশ বা ৩০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি সর্বশেষ ২৪ টাকা ১০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দরও ছিল একই। দিনব্যাপী ১৮ লাখ ৩৭ হাজার ৫৯ শেয়ার ৫৯৩ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ৪ কোটি ৪০ লাখ ৮০ হাজার টাকা। দিনভর শেয়ারদর ২৩ টাকা ২০ পয়সা থেকে ২৪ টাকা ৫০ পয়সায় হাতবদল হলেও গত এক বছরের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ারদর সর্বনিম্ন ১১ টাকা ১০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ২৫ টাকা ১০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করে।
ব্যাংক খাতের কোম্পানিটি ২০২৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘বি’ ক্যাটেগরিতে লেনদেন হয়েছে। কোম্পানির ১ হাজার কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ৬৩৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট ৬৩ কোটি ৯৬ লাখ ৬৯ হাজার ৭৫৩ শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে ৭৬ দশমিক ৬০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৯ দশমিক ২৭ শতাংশ এবং বাকি ১৪ দশমিক ১৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে।
এদিকে সাপ্তাহিক দরবৃদ্ধির তালিকায় এর পরের অবস্থানে থাকা ন্যাশনাল ব্যাংক পিএলসির ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৮ দশমিক ৩১ শতাংশ, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ, দুলামিয়া কটনের ৬ শতাংশ, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেডের ৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ, অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেন লিমিটেডের ৫ শতাংশ, রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেডের ৪ দশমিক ৩১ শতাংশ, কে অ্যান্ড কিউ বাংলাদেশ লিমিটেডের ৩ দশমিক ৫৯ শতাংশ এবং জিকিউ বলপেন ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে।
গত সপ্তাহে লেনদেনের তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করে গ্রামীণফোন লিমিটেডের শেয়ার গত সপ্তাহে লেনদেনের তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করছে। আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনে কোম্পানিটির অবদান ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ। সর্বশেষ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ বা ১২ টাকা ২০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি সর্বশেষ ৩৪৬ টাকা ২০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দরও ছিল একই। দিনভর শেয়ারদর সর্বনিম্ন ৩২৪ টাকা ও সর্বোচ্চ ৩৫০ টাকায় হাতবদল হয়। দিনজুড়ে কোম্পানিটির ২৫ লাখ ৩৮ হাজার ১৯টি শেয়ার মোট ৭ হাজার ৫১৬ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ৮৪ কোটি ৬৬ লাখ ২০ হাজার টাকা। অন্যদিকে গত এক বছরের মধ্যে কোম্পানির শেয়ারদর ২২১ টাকা থেকে ৩৮৭ টাকার মধ্যে ওঠানামা করে।
কোম্পানিটি ২০০৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘এ’ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে। ৪ হাজার কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ৩৫০ কোটি ৩০ লাখ টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ৪ হাজার ৫১০ কোটি ১ লাখ টাকা। ডিএসইর সর্বশেষ তথ্যমতে, কোম্পানির মোট ১৩৫ কোটি তিন লাখ ২২টি শেয়ার রয়েছে। কোম্পানির মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে ৯০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৬ দশমিক ৩১ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে ১ দশমিক ০৪ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে রয়েছে বাকি ২ দশমিক ৬৫ শতাংশ শেয়ার।